রাজ্যের পর্যটন ক্ষেত্রের উন্নয়নে ব্যাংকগুলিকে এগিয়ে আসতে আহ্বান জানালেন মুখ্যমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার, আগরতলা, ৪ আগস্ট।। রাজ্যের অর্থনৈতিক উন্নয়নে পর্যটন শিল্পের যথেষ্ট উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে। তাই পর্যটন ক্ষেত্রের উন্নয়নে রাজ্যের ব্যাংকগুলিকে এগিয়ে আসতে হবে। পাশাপাশি রাজ্য সরকার যেসমস্ত ক্ষেত্রগুলিকে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করছে সে সম্পর্কেও ব্যাংকগুলিকে অবগত হওয়া প্রয়োজন। তবেই ব্যাংকগুলি রাজ্যের অর্থনৈতিক বিকাশে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ করতে পারবে।

আজ সচিবালয়ে ২নং সভাকক্ষে ১৪০তম স্টেট লেভেল ব্যাস্কার্স কমিটির সভায় মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন। সভার সর্বশেষ স্টেট লেভেল ব্যাস্কার্স কমিটির বৈঠকে বিভিন্ন বিষয়ে যে সমস্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল তা কতটুকু অগ্রসর হয়েছে তার পর্যালোচনা করা হয়।

সভায় পাঞ্জাব ন্যাশন্যাল ব্যাংকের ডিজিএম আনন্দ কুমার স্টেট লেভেল ব্যাঙ্কার্স কমিটির বিস্তারিত কর্মসূচি সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে বলেন, ২০২২-২৩ অর্থবর্ষের অ্যানুয়েল ক্রেডিট প্ল্যানে ব্যাংকগুলি প্রাইমারি ক্ষেত্র সহ প্রতিটি ক্ষেত্রে ১০০ শতাংশ ডিসবার্সমেন্টের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে। চলতি অর্থবর্ষের জুন মাস পর্যন্ত কৃষি, ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্প সহ অন্যান্য প্রাইমারি সেক্টরগুলির জন্য ১১৩১.৩৬ কোটি টাকা ব্যাংকগুলি ডিসবাস করেছে। ২০২২-২৩ অর্থবর্ষের জুন মাস পর্যন্ত ১২ হাজার ১৭০ জন কেসিসি কার্ড প্রাপ্ত কৃষককে মোট ৭৭ কোটি ৭২ লক্ষ টাকার ঋণ প্রদান করেছে ব্যাংকগুলি।

ডিজিএম আনন্দ কুমার আরও জানান, ২০২২-২৩ অর্থবর্ষের জুন মাস পর্যন্ত ২১ জন এসসি ও এসটি মহিলা সুবিধাভোগীকে মোট ২ কোটি ১০ লক্ষ ৯৬ হাজার টাকার ঋণ দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী মুদ্রা যোজনায় চলতি অর্থবর্ষের জুন মাস পর্যন্ত ৩৮ হাজার ২১ জন ব্যাংক অ্যাকাউন্ট হোল্ডারকে ২২৮.৮২ কোটি টাকার ঋণ প্রদান করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী জনধন যোজনায় এখন পর্যন্ত ৮ লক্ষ ৯৯ হাজার ৮৮০ জন ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলেছে।

এর মধ্যে গ্রামীণ এলাকায় অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে ৭ লক্ষ ১৪ হাজার ৮৩টি এবং ১ লক্ষ ৮৫ হাজার ৭৯৭টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে শহর এলাকায়। এ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী ডা. সাহা বলেন, প্রধানমন্ত্রী মুদ্রা যোজনা এবং স্টার্ট আপ ইন্ডিয়া যোজনায় ঋণ গ্রহণ করে বেকার যুবক যুবতীদের আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার বিরাট সুযোগ রয়েছে। তাই এই দুটি যোজনায় বেশি সংখ্যক ঋণ প্রদানের জন্য ব্যাংকগুলিকে সদর্থক ভূমিকা নিতে হবে।

সভায় পাঞ্জাব ন্যাশন্যাল ব্যাংকের ডিজিএম আনন্দ কুমার জানান, চলতি অর্থবর্ষের জুন মাস পর্যন্ত বিভিন্ন ব্যাংকের মাধ্যমে ৯৩ জন শিক্ষার্থীকে ৩ কোটি ৬৩ লক্ষ টাকার শিক্ষা ঋণ মঞ্জুর করা হয়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবর্ষের জুন মাস পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ১, ১৬৫টি গৃহ ঋণের মঞ্জুরী দেওয়া হয়েছে। ডিজিএম আনন্দ কুমার আরও জানান, ২০২২-২৩ অর্থবর্ষের জুন মাস পর্যন্ত মিনি ডেয়ারি প্রকল্পে ৯৮টি প্রস্তাবিত ঋণের মঞ্জুরী দিয়েছে বিভিন্ন ব্যাংকগুলি।

সভায় এছাড়াও ব্যাংকের নতুন শাখা খোলা, পর্যটন বিকাশে সহায়তা, স্বসহায়ক দলগুলিকে ঋণ প্রদানে গুরুত্ব দেওয়া, স্বাবলম্বন ও প্রধানমন্ত্রী এমপ্লয়মেন্ট জেনারেশন প্রোগ্রামে ঋণ প্রদান, রাজ্যের প্রতিটি ব্লক এলাকায় এটিএম স্থাপন ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।ব্যাংকগুলিকে আরও বেশী করে ঋণ আদায় শিবির করার উপর সভায় গুরুত্ব আরোপ করেন মুখ্যসচিব জে কে সিনহা। এ বিষয়ে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকেও প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান করার আশ্বাস প্রদান করেন মুখ্যসচিব।

স্টেট লেভেল ব্যাস্কার্স কমিটির ১৪০ তম সভায় মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও মুখ্যসচিব জে কে সিনহা, অর্থ দপ্তরের সচিব ব্রিজেশ পান্ডে, রাজস্ব দপ্তরের সচিব পুনিত আগরওয়াল, পর্যটন দপ্তরের সচিব কিরণ গিত্যে, সমবায় দপ্তরের সচিব অভিষেক সিং, গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের বিশেষ সচিব সন্দিপ আর রাঠোর, পাঞ্জাব ন্যাশন্যাল ব্যাংকের মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক অতুল কুমার গোয়েল, পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের জেনারেল ম্যানেজার সাক্ষী গোপাল সাহা, আগরতলাস্থিত রিজার্ভ ব্যাংক শাখার জেনারেল ম্যানেজার সম্ভবন্ত সিং সাহাতো এবং এসএলবিসি কমিটির আওতাভুক্ত বিভিন্ন ব্যাংকের প্রতিনিধি এবং বিভিন্ন দপ্তরের আধিকারিকগণ উপস্থিত ছিলেন।

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *