রাশিয়ান বাহিনী ইউক্রেনের পারমাণবিক কেন্দ্রে গুলি করছে

অনলাইন ডেস্ক, ৪ মার্চ।।ইউক্রেনের জাপোরিঝিয়া পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের আশপাশে রাশিয়া এবং ইউক্রেনের সৈন্যদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ চলছে। ইউক্রেনের কর্মকর্তারা বলছেন, পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের একটি ভবনে রাশিয়ার বোমা হামলায় সেখানে আগুন ধরে যায়। এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি ইউরোপের সবচেয়ে বড় পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র।

এই হামলার পর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি রাশিয়ার বিরুদ্ধে ‘পারমাণবিক সন্ত্রাস’ অবলম্বন করার এবং রাশিয়া ইউক্রেনে চেরনোবিল বিপর্যয়ের ‘পুনরাবৃত্তি’ করতে চায় বলে অভিযোগ করেছেন।

এক ভিডিও বার্তায় জেলেনস্কি বলেন, ‘রাশিয়া ছাড়া অন্য কোনো দেশ পারমাণবিক শক্তি ইউনিটগুলোতে গুলি বা বোমা হামলা চালায়নি। আমাদের ইতিহাসে এই প্রথম। মানবজাতির ইতিহাসেও এমন হামলার ঘটনা এটাই প্রথম। সন্ত্রাসী রাষ্ট্র এখন পারমাণবিক সন্ত্রাসের আশ্রয় নিয়েছে’।

জাপোরিঝিয়ায় পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের আগুন নিভিয়ে ফেলা হয়েছে বলে খবর দিয়েছে আল জাজিরা।

শুক্রবার সকাল ৬টার পর এক ফেসবুক বিবৃতিতে দেশটির জরুরি পরিষেবা কর্তৃপক্ষ জানায়, এনারগোদারের জাপোরিঝিয়া এনপিপির প্রশিক্ষণ ভবনে আগুন নিভিয়ে ফেলা হয়েছে।

ইউক্রেন এর আগে বলেছিল, যে রুশ বাহিনী প্ল্যান্টে হামলা করেছে এবং এর পাশে একটি পাঁচতলা প্রশিক্ষণ ভবনে আগুন লেগেছে।

এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ছয়টি পারমাণবিক চুল্লির রয়েছে, যার একটির কাছে আগুন লাগে। রুশ বাহিনীর হামলায় অগ্নিকাণ্ডের সূচনা বলে উল্লেখ করা হয়।

অভিযোগ করা হয়, অগ্নিকাণ্ডের মাঝেও গোলাবর্ষণ অব্যাহত রাখে সেনারা।

এ ঘটনার পরপরই ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতি ভলোদিমির জেলেনস্কি জরুরি সাহায্যের জন্য আবেদন জানিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। শুক্রবার ভোর রাতে সম্ভাব্য পারমাণবিক বিপর্যয়ের বিষয়ে সতর্ক করেন। তিনি বলেন, ‘ইউরোপীয়রা, দয়া করে জেগে উঠুন! আপনাদের রাজনীতিবিদদের বলুন যে, রাশিয়ান বাহিনী ইউক্রেনের পারমাণবিক কেন্দ্রে গুলি করছে’।

তিনি বলেন, ‘রাশিয়ানরা এর আগে অতীতে সতর্ক করেছে তারা বিশ্বকে পারমাণবিক ছাইয়ে ঢেকে দেবে। তা এখন কেবল আর একটি সতর্কতা নয়, বরং তা এখন বাস্তব’।

ওই হামলার পর আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রসি জানান, প্ল্যান্টের ‘প্রয়োজনীয়’ সরঞ্জাম এখনো কাজ করছে। সংস্থাটি টুইটারে পোস্ট বলছে, ইউক্রেন জানিয়েছে জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অগ্নিকাণ্ড প্রয়োজনীয় সরঞ্জামকে প্রভাবিত করেনি।

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পারমাণবিক নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ গ্রাহাম অ্যালিসন বলেছিলেন, আগুন অব্যাহত থাকলে চুল্লিটি গলে যেতে পারে।

তিনি সতর্ক করে বলেন, তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়লে ১৯৮৬ সালের সালের চেরনোবিল দুর্যোগের মতো আশপাশের অঞ্চলের পরিবেশ দূষিত হয়ে পড়বে। যা বছরের পর বছর ধরে চলতে থাকবে।

অ্যালিসনের মতে, আশপাশের এলাকার বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করতে রুশ বাহিনী কেন্দ্রটিকে অফলাইন করার চেষ্টা করেছে।

ইউরোপের বৃহত্তম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র জাপোরিঝিয়া ইউক্রেনের প্রায় এক-চতুর্থাংশ বিদ্যুতের জোগান দেয়।

 

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *