অনলাইন ডেস্ক, ১৪ মে।। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে যে, শ্রীলঙ্কার একদল বিক্ষুব্ধ জনতা একটি বিলাসবহুল গাড়ি ধাক্কা মেরে জলাশয়ে ফেলে দিচ্ছেন। বলা হচ্ছে এই গাড়িটি দেশটির সাবেক একজন মন্ত্রীর। রাস্তার একপাশ থেকে গাড়িটি ঠেলে অন্যপ্রান্তে নিয়ে গিয়ে জলে ফেলে দিতে দেখা যায় বিক্ষুব্ধ জনতাকে।
টুইটারে ইমপোস্টার এডিটস নামের একটি অ্যাকাউন্ট থেকে এই ভিডিওটি প্রকাশ করা হয়েছে। ভিডিওতে এক বিক্ষোভকারীর সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে যেখানে তিনি বলেছেন, দেশে কোনও গ্যাস নেই, জ্বালানি নেই। প্রয়োজনীয় ওষুধ নেই। লোকজন ব্যাপক ভোগান্তি পোহাচ্ছেন এবং দিনে মাত্র একবেলা খাবার খেয়ে বেঁচে আছেন।
অর্থনৈতিক সঙ্কটে বিপর্যস্ত শ্রীলঙ্কায় গত দুই মাস ধরে চলা বিক্ষোভ-প্রতিবাদ সম্প্রতি সহিংস আকার ধারণ করেছে। গত ১৯ এপ্রিল পুলিশের গুলিতে প্রথম একজন বিক্ষোভকারীর প্রাণহানির পর বিক্ষোভ ধীরে ধীরে সহিংস হয়ে ওঠে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দেশটির আইনশৃঙ্খলাবাহিনী বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে টিয়ারগ্যাস এবং জলকামান ব্যবহার করছে। কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে অসংখ্য বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার এবং কারফিউ জারি করেছে।
১৯৪৮ সালে স্বাধীনতা লাভের পর ইতিহাসের সবচেয়ে কঠিন অর্থনৈতিক সংকটের মুখোমুখি হয়েছে শ্রীলঙ্কা। রাষ্ট্রীয় কোষাগারে বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ তলানিতে নেমে যাওয়া এর অন্যতম প্রধান কারণ। করোনাভাইরাস মহামারি, উচ্চাভিলাষী ও অলাভজনক বিভিন্ন প্রকল্পে সরকারের বিনিয়োগ, ত্রুটিপূর্ণ করনীতি ও সরকারি অব্যবস্থাপনার কারণে শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংকে বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ ব্যাপকভাবে কমে গেছে।
এর ফলে অনেকদিন ধরে জ্বালানি তেল, খাদ্য, ওষুধসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য আমদানি করতে পারছে না দেশটি। ফলে মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে শ্রীলঙ্কার গণপরিবহন ও বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যবস্থা।
দিনের দীর্ঘ সময় ধরে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নতা, নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের ব্যাপক ঘাটতির মধ্যে দিয়ে শ্রীলঙ্কায় রাজনৈতিক সঙ্কটের শুরু হয় গত মার্চের শেষের দিকে। যে কারণে দেশটির লাখ লাখ মানুষ প্রায় প্রত্যেক দিন সরকারের পদত্যাগের দাবিতে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেন।
গত সোমবার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাক্ষের বড় ভাই ও প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাক্ষের বাসভবনে বিক্ষোভকারীরা আগুন ধরিয়ে দেয়। সেদিনই পদত্যাগ করেছিলেন মাহিন্দা। কিন্তু পদত্যাগের আগে তার সমর্থকরা বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা চালালে পুরো শ্রীলঙ্কাজুড়ে সহিংসতা শুরু হয়।
In Sri Lanka, Anger over the cost of living the public threw politicians' cars into the waters.
— 🥀_ Imposter_🥀 (@Imposter_Edits) May 11, 2022