গরু হত্যার অভিযোগ তুলে দুই আদিবাসী যুবককে নৃশংস পিটিয়ে মারল গ্রামবাসী

অনলাইন ডেস্ক, ৪মে।। গরু হত্যা করার অভিযোগ তুলে দুই আদিবাসী যুবককে পিটিয়ে মারল গ্রামবাসীরা। মধ্যপ্রদেশের ঘটনা। আক্রোশে অন্ধ হয়ে রাগে উন্মত্ত প্রায় ২০ জন গ্রামবাসী ওই দুই যুবককে ঘর থেকে টেনে হিঁচড়ে বের করে। তার পর বেধড়ক মারধর করে। এই নৃশংস ঘটনায় মৃত্যু হয় ওই দুই যুবকের। পরে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাদের মৃত বলে জানান।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, মধ্যপ্রদেশের সনি জেলায় দুই যুবককের বিরুদ্ধে গরু জবাই করার অভিযোগ তোলে কিছু স্থানীয় মানুষ। এর পরেই গ্রামের প্রায় ২০ জন মানুষ চড়াও হয় তাদের বাড়িতে। বাড়ি থেকে টেনে বের করে এনে চলে নৃশংস মারধর। দুই যুবকের মৃত্যু হয়। অপর একজন গ্রামবাসীদের মারে গুরুতর জখম হয়েছেন। পুলিশ দুই যুবককেই রক্তাক্ত অবস্থায় উন্মত্ত স্থানীয় মানুষদের হাত থেকে কোনরকমে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা জানান দুজনেই মারা গেছেন।
এর পরেই পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে যান সনি জেলার পুলিশ প্রধান। পুলিশ জানিয়েছে যে ২০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হয়েছে তাদের নামে ৬ টি খুনের অভিযোগ আছে।
এই ঘটনায় অভিযুক্তদের উপযুক্ত শাস্তির দাবিতে জব্বলপুর-নাগপুরে অবস্থান বিক্ষোভ করেন কংগ্রেস বিধায়ক অর্জুন সিং কাকোদিয়া।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এস কে মারাভি জানিয়েছেন, দুজন আদিবাসী যুবক মারা গেছেন। ১৫-২০ জন মানুষ ওই যুবকদের বাড়িতে চড়াও হয়। তাদের অভিযোগ ছিল ওই দুই যুবক গরু হত্যা করেছে। ঘটনায় অপর একজন আহত হয়েছে। তার আঘাত গুরুতর নয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, ঘটনায় খুনের অভিযোগ দায়ের হয়েছে। অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে। ২০ জন অভিযুক্তদের মধ্যে কয়েকজনের নামে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। বাকিদের নাম পরিচয় এখনও জানা যায়নি। সন্দেহের তালিকায় থাকা দু-তিনজনে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। নিহত যুবকদের বাড়ি থেকে ১২ কেজি মাংস উদ্ধার হয়েছে।
হামলায় আহত ব্রজেশ ভাট্টি নামের যুবক জানিয়েছেন, রাগে উন্মত্ত কিছু মানুষ এসে তাদের ওপর চড়াও হয়। কিছু না শোনার আগেই সম্পত বাট্টি ও ধনশা নামে দুই আদিবাসী যুবককে লাঠি দিয়ে নৃশংসভাবে এলোপাথাড়ি মারতে থাকে।
ঘটনায় কংগ্রেসের পক্ষ থেকে দ্রুত উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের দাবি তোলা হয়েছে।
ঘটনায় মধ্যপ্রদেশে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী, কংগ্রেস নেতা কমল নাথ বলেছেন, আমি সরকারের কাছে উচ্চ পর্যায় তদন্ত সহ ঘটনায় জড়িতদের কঠোর শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। সেই সঙ্গে হতাহতদের পরিবারকে সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা ও সরকারি খরচে আহত ব্যক্তির চিকিৎসার ব্যবস্থা করারও দাবি জানিয়েছেন কমল নাথ। কমল নাথ আরও বলেন, এই ঘটনায় স্থানীয় কিছু মানুষের অভিযোগ বজরং দল এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত আছে। কমল নাথ দাবি করেছেন যে ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর ডেটা দেখায় যে, মধ্যপ্রদেশে আদিবাসীদের ওপরে নির্যাতন চালানোর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *