অনলাইন ডেস্ক, ২২ মার্চ ।। এবার হিজাব ইস্যুতে প্রতিবাদী শিক্ষার্থীদের কোণঠাসা করতে আরও একধাপ এগোল কর্নাটক রাজ্য। যেসব পরীক্ষার্থীরা বোর্ড পরীক্ষায় দেয়নি, তারা আর পরীক্ষায় বসতে পারবে না বলে জানিয়ে দিলেন কর্ণাটকের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষামন্ত্রী বি সি নাগেশ। শিক্ষামন্ত্রী সাংবাদিকদের সামনে আরও স্পষ্ট করে দিয়ে বলেন, একমাত্র যারা পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েছে, সেই শিক্ষার্থীরাই পরীক্ষায় বসার সুযোগ পাবে।
সোমবার সাংবাদিকদের সামনে কর্ণাটকের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষামন্ত্রী বি সি নাগেশ বলেন, যারা হিজাব ইস্যুতে প্রতিবাদে শামিল হওয়ার জন্য এই কম্পিটিটিভ পরীক্ষায় অনুপস্থিত থেকেছে, তাদের সেই অনুপস্থিতি কোনওভাবেই মানবিক দিক দিয়ে মার্জনা করা হবে না।
নাগেশ আরও বলেন, আদালতের রায় আমরা মেনে চলব। হিজাব ইস্যুতে প্রতিবাদ বা অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে পড়াশোনা না করা কখনই পরীক্ষায় অনুপস্থিত হওয়ার কারণ হতে পারে না। চূড়ান্ত পরীক্ষায় ‘অনুপস্থিত মানে অনুপস্থিত’। তার জন্য কখনই আবার পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে পারে না। একমাত্র যারা অকৃতকার্য হয়েছে, তারাই আবার পরীক্ষায় বসার সুযোগ পাবে। বোর্ড পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার পরে আবার অনুপস্থিতদের জন্য পুনরায় পরীক্ষা নেওয়ার নতুন কোনও নজির নেই।
নাগেশ আরও বলেন, আমরা যদি পরীক্ষায় অনুপস্থিত থাকার কারণ মানবিক দিক দিয়ে বিচার করি, তাহলে যে কেউ কোনও অজুহাতে পরীক্ষায় অনুপস্থিত হয়ে আবার পরীক্ষার বসার দাবি জানাবে। আমরা এটা হতে দিতে পারি না। শিক্ষার্থীদের সুপ্রিম কোর্টে যাওয়া নিয়ে নাগেশ রাগের সঙ্গে বলেন, আদালতের অন্তর্বর্তী ও চূড়ান্ত আদেশ পরীক্ষার আগেই এসেছিল। তার পরেও কিভাবে তারা শীর্ষ আদালতে গেল সেটা আমি বিশ্বাসই করতে পারছি না।
উল্লেখ্য, বিগত কয়েকমাস ধরে কর্নাটকের হিজাব কাণ্ড নিয়ে উত্তপ্ত হয় রাজ্য-রাজনীতি। মামলা আদালত পর্যন্ত গড়ায়। ফেব্রুয়ারিতে কর্নাটক হাইকোর্টের অন্তর্বর্তী আদেশে পূর্ণাঙ্গ নির্দেশ না হওয়া পর্যন্ত ক্লাসরুমের মধ্যে শাল, স্কার্ফ, ধর্মীয় পতাকার ওপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। সেই সময় বেশ কিছু মুসলিম শিক্ষার্থী ক্লাস বর্জন করে ও পরীক্ষা এড়িয়ে যায়। এর পর শ্রেণিকক্ষের ভিতরে মাথায় স্কার্ফ দেওয়ার অনুমতি চেয়ে আদালতে আবেদন জানায় কয়েকজন ছাত্রী। আদালত সেই আবেদন খারিজ করে দেয়। আদালত তার চূড়ান্ত রায়ে জানিয়ে দেয়, স্কুল ইউনিফর্ম একটি যুক্তিসঙ্গত বিধিনিষেধ, যা সাংবিধানিকভাবে বৈধ। ধর্মাচরণে হিজাব অপরিহার্য নয়। আদালত আরও জানায়, স্কুলের পোশাক নিয়ে রাজ্য সরকারের যে কোনও আদেশ জারি করার ক্ষমতা রয়েছে। মামলা সংক্রান্ত রিট পিটিশনও খারিজ করে দেয় আদালত।এদিকে এর পরে কর্নাটক হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিবাদী ছাত্রীরা। সেই শিক্ষার্থীরা জানিয়ে দেয়, হিজাব ছাড়া ক্লাসে যাবে না। এপ্রিলের দ্বাদশ শ্রেণীর বোর্ড পরীক্ষা বয়কটের ডাক দেয় তারা।