অনলাইন ডেস্ক, ১৮ মার্চ।। বিশ্বজুড়ে জ্বালানি তেলের দাম নিয়ন্ত্রণে রাশিয়াকে সহযোগিতা করার ঘোষণা দিল সংযুক্ত আরব আমিরাত। পাশপাশি, রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যকার উত্তেজনা নিরসনে যে কোনো কূটনৈতিক পদক্ষেপকে স্বাগত জানাতেও তারা প্রস্তুত আছে বলে জানিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের উপসাগরীয় অঞ্চলের এই দেশ।
বৃহস্পতিবার মস্কোতে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের সঙ্গে বৈঠক শেষে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন আরব আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ আবদুল্লাহ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমরা ওপেক প্লাস জোটের নীতি অনুযায়ী চলতে আগ্রহী। সেই অনুযায়ী বিশ্বে জ্বালানি তেলের মূল্য স্থিতিশীল রাখতে রাশিয়ার সঙ্গে সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখবে আমিরাত। জ্বালানি তেল ও খাদ্যের বাজার স্থিতিশীল রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ’।
তিনি আরও বলেন যে, ‘রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যকার যে উত্তেজনা, তা প্রশমনে যে কোনো কূটনৈতিক উদ্যোগকেও স্বাগত জানাবে আমিরাত। এমনকি যেসব দেশ ইতোমধ্যে কূটনৈতিকভাবে এই উত্তেজনা প্রশমনে কাজ করছেন, তাদের সঙ্গে আমরা যুক্ত হতে চাই’।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের সরবরাহ কমে যাওয়া ও তেলের দাম বাড়তে থাকায় বাজার স্থিতিশীল রাখতে আমিরাত ও সৌদি আরবকে অতিরিক্ত তেল উৎপাদনের আহ্বান জানিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়া যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বুধবার সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরে গিয়েছিলেন।
সৌদি আরব যাওয়ার আগে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিট এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ইউরোপকে রুশ জ্বালানির ওপর থেকে নির্ভরতা কমাতে একটি নতুন আন্তর্জাতিক জোট করতে চায় যুক্তরাজ্য এবং সেই জোটের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার সংযুক্ত আরব আমিরাত ও সৌদি আরব।
বৃহস্পতিবারের সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের এই প্রস্তাব কার্যত খারিজ করে দিল সংযুক্ত আরব আমিরাত। সৌদি আরব অবশ্য এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলেনি; তবে দেশটির সরকারি প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সৌদি যুবরাজ মোহম্মদ বিন সালমান যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের পরিবর্তে চীনের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক করতে বেশি আগ্রহী।
পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোকে ঘিরে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে শুরু হওয়া উত্তেজনা শেষ পর্যন্ত যুদ্ধে পৌঁছায় গত ২৪ ফেব্রুয়ারি। সেদিন ভোরে ইউক্রেনে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ শুরুর নির্দেশ দেন ভ্লাদিমির পুতিন।
অভিযান শুরুর দুদিন আগেই এক বিবৃতিতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছিল, রাশিয়ার সঙ্গে বন্ধুত্ব ও পারিস্পরিক সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্ক জোরদার করতে চায় আমিরাতের সরকার।