অনলাইন ডেস্ক, ১৬ মার্চ ।। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য হবে না ইউক্রেন। এটা দেশবাসীর মেনে নেওয়া উচিৎ। রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের ২০তম দিনে জাতির উদ্দেশে ভাষণে এমনই তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তা হলে কি ক্রমশ আপসের রাস্তায় হাঁটছে ইউক্রেন? ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের এই ঘোষণার পর থেকেই প্রশ্ন উঠছে বিভিন্ন মহলে।
রুশ সেনারা ইউক্রেনর রাজধানী কিয়েভের যত কাছে পৌঁছাচ্ছে, ততই তাৎপর্যপূর্ণ বদল ধরা পড়ছে জেলেনস্কির বক্তব্যে। কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মূলত ন্যাটো-ইউক্রেন সম্পর্ক থেকেই ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের শুরু। রাশিয়ার দীর্ঘ দিনের অভিযোগ, যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো দেশ সমূহ রাশিয়াকে ভৌগোলিক ভাবে ঘিরে ফেলার ছক কষছে। তারই অন্যতম পদক্ষেপ মৌখিক চুক্তি ভেঙে ইউক্রেনের ন্যাটোতে অন্তর্ভুক্তির প্রক্রিয়া। এবার রুশ আক্রমণের ২০তম দিনে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট কার্যত স্বীকার করে নিলেন, ইউক্রেন আমেরিকার নেতৃত্বাধীন ন্যাটো গোষ্ঠীর সদস্য হবে না।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি আরও বলেন যে, রাশিয়ার সঙ্গে শান্তি আলোচনা ‘আরো বাস্তবসম্মত’ হতে শুরু করেছে।
ইউক্রেনের আলোচক মিখাইলো পোডোলিয়াক বলেছেন, আলোচনায় এখনো কিছু ‘মৌলিক দ্বন্দ্ব’ রয়েছে তবে ‘অবশ্যই সমঝোতা করার সুযোগ রয়েছে’।
প্রসঙ্গত, রুশ আগ্রাসনের একেবারে শুরু থেকে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি ইউক্রেনকে ন্যাটো সদস্যভুক্ত করার আবেদন-নিবেদন জারি রেখেছিলেন। কিন্তু সদস্যপদ তো দূর অস্ত্, ইউক্রেনকে কেবল মাত্র অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করেই দায় সেরেছে ন্যাটো। অথচ ইউক্রেনের এই ন্যাটো ঘনিষ্ঠতা নিয়েই আপত্তি ছিল রাশিয়ার! এমন পরিস্থিতিতে ক্রমশ ন্যাটোর সঙ্গে দূরত্ব বাড়ছে ইউক্রেনের। অন্য দিকে রাশিয়ার আগ্রাসনের তেজ মোকাবিলা করে বেশি দিন যে কিয়েভ ধরে রাখা যাবে না, তাও বুঝতে পারছেন জেলেনস্কি। এই প্রেক্ষিতেই ন্যাটো নিয়ে তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করলেন তিনি।
এদিকে কিয়েভের দিকে এক পা এক পা করে এগোচ্ছে রুশ বাহিনী। গতকাল আগ্রাসনের ২০তম দিন থেকেই কিয়েভের ওপর বোমাবর্ষণের তীব্রতা বাড়িয়েছে রাশিয়া। এতে অন্তত পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। ইউক্রেন কর্তৃপক্ষের দাবি, রুশ বাহিনীর লাগাতার বোমাবর্ষণে ভেঙে পড়েছে একাধিক বহুতল। ধ্বংসস্তূপের নীচে কত জন চাপা পড়েছেন, তা এখনো স্পষ্ট নয়।