আচমকাই ইনস্টাগ্রামে লুইজা রোজোভার অ্যাকাউন্টটি গায়েব হয়ে গিয়েছে

অনলাইন ডেস্ক, ১১ মার্চ।। রাশিয়ার এক তরুণীকে লক্ষ্য করে ইন্টারনেট ও সোশ্যাল মিডিয়ায় কটুক্তির ঝড় বইছে। ভ্লাদিমির পুতিনের রুশ সেনারা ইউক্রেন হামলার পর থেকেই ওই মেয়ের দিকে ধেয়ে আসছে ট্রোলিংয়ের বিষাক্ত তীর।

তবে আচমকাই ইনস্টাগ্রামে লুইজা রোজোভার অ্যাকাউন্টটি গায়েব হয়ে গিয়েছে। অনেকের দাবি, ট্রোলিংয়ে বিপর্যস্ত হয়েই নিজের অ্যাকাউন্টটি সরিয়ে নিয়েছেন খোদ লুইজা।

অনেকের দাবি, আঠারো বছর বয়সী ওই তরুণীই রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের মেয়ে। গুঞ্জন রয়েছে রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের এক পরকীয়া সম্পর্কের জেরেই তার জন্ম। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ওই অষ্টাদশীর জন্মদাতা ‘বাবা’-কে কাঠগড়ায় তুলে তার দিকে কটাক্ষের তীর ছোড়া চলছে। সেসব কটুক্তি এতই বিষাক্ত যে বাধ্য হয়ে ইনস্টাগ্রামে নিজের অ্যাকাউন্ট ডিলিট করে দিয়েছেন লুইজা।

ইন্টারনেটে বেশ সক্রিয় সেন্ট পিটার্সবার্গের ছাত্রী লুইজা। সেখানে প্রায়শই ছবি পোস্ট করতেন। কখনও তাকে দেখা গেছে, ক্যাফেতে সময় কাটাচ্ছেন। কখনও বা ঘুরে বেড়াচ্ছেন প্যারিসে। অনেক সময় নিজের ফ্যাশন লেবেলের কাজ নিয়ে ব্যস্ত। ডিজে হিসাবেও চুটিয়ে উপভোগ করছেন জীবন।

এক সময় নিজের জীবনের খুঁটিনাটি শেয়ার করলেও হঠাৎই যেন তা কমে গিয়েছে। ইনস্টাগ্রামে লুইজার শেষ পোস্টটি ছিল প্রায় পাঁচ মাস আগেকার। ২০২১ সালের অক্টোবরে। অনেকেই সন্দিহান, পুতিনের চাপে পড়েই ইনস্টাগ্রামে পোস্ট বন্ধ করেছেন লুইজা। যদিও সেই অ্যাকাউন্টটি এই সে দিন পর্যন্তও দেখা যাচ্ছিল। তবে ইউক্রেনে পুতিনবাহিনীর হামলার পরই ইনস্টাগ্রামে লুইজার শেষ পোস্টের নীচে একের পর এক বিষাক্ত মন্তব্য ধেয়ে এসেছে।

২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান ঘোষণার পর লুইজার প্রতি যেমন এক জনের মন্তব্য, ‘আপনি কি বাঙ্কারে লুকিয়ে রয়েছেন? ইঁদুরের মতো?’

লুইজার পিতৃপরিচয় নিয়ে জল্পনা চললেও এ নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খোলেননি তার মা শ্বেতলানা ক্রিভোনোগিখ। রাশিয়ার অন্যতম ধনী এই নারীর সঙ্গে পুতিনের বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল বলে গুঞ্জন রয়েছে। এ বিষয় নিয়ে নিজের প্রতিক্রিয়া জানাননি পুতিন। মায়ের মতো মুখে কুলুপ এঁটেছেন লুইজাও। যদিও একবার রাশিয়ার সংবাদমাধ্যমে বলেছিলেন, ‘আমাকে দেখতে হয়তো কমবয়সি পুতিনের মতো লাগে!’

রাশিয়ার একটি ব্যাঙ্কের মালিকদের একজন শ্বেতলানার বিপুল সম্পত্তি। তা ছড়িয়ে ফ্রান্সের মোনাকোতেও। অনেকের দাবি, ওই ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলেই কোথাও লুকিয়ে রয়েছেন ‘পুতিন-কন্যা’। অনেকে আবার মনে করছেন, নিজের পরিবারের সদস্যদের সাইবেরিয়ায় কোনও গোপন আস্তানায় সরিয়ে ফেলেছেন পুতিন।

লুইজার প্রতি এক জনের কটাক্ষ, ‘যখন আপনি মোনাকোর আশপাশে উড়ে বেড়াচ্ছেন, তখন আপনার প্রজন্মের অনেকে ইউক্রেনে মরতে বসেছেন। সবই আপনার বাবার জন্য…’। আর এক জন তো সরাসরি লুইজাকে আক্রমণ করেছেন। লিখেছেন, ‘নিজের মুখটা দেখান। ভীতু কোথাকার!’

ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জেরে লুইজার মতো প্রতিপত্তিশালী নাগরিকেরা যে বিপাকে পড়বেন, তা-ও উল্লেখ করেছেন অনেকে। এক জন লিখেছেন, ‘এখনও যদি না হয়ে থাকে, তবে শীঘ্রই আপনি নেটফ্লিক্স, স্পটিফাই, গুগ্‌ল বা অ্যামাজন পে-র মতো অ্যাপ ব্যবহার করতে পারবেন না। সমস্ত জনপ্রিয় ব্র্যান্ড রাশিয়াকে বয়কট করবে’।

ইউক্রেনের যুদ্ধের বিরুদ্ধে লুইজাকে সরব হওয়ার পরামর্শ দিতেও ছাড়েননি অনেকে। বলেছেন, ‘চুপ করে থাকাটাই শুধু বন্ধ করতে হবে আপনাকে। এক পাশে দাঁড়িয়ে থাকবেন না। ইউক্রেনে কী ঘটছে, সেই সত্যিটা মানুষজনকে বলুন’।

তবে স্বল্পসংখ্যক হলেও লুইজার পাশে অনেকে দাঁড়িয়েছেন। তেমনই এক জনের উক্তি, ‘এক জন উন্মাদ বাবার জন্য ওর (লুইজা) তো দোষ নেই’। অন্য এক জনের মতে, ‘ওকে কাঠগড়ায় তুলবেন না’।

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *