সর্বাঙ্গীন বিকাশের অন্যতম শর্ত মহিলাদের আক্ষরিক ক্ষমতায়ন : মুখ্যমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার, ফটিকরায়, ১০ মার্চ।। সর্বাঙ্গীন বিকাশের অন্যতম শর্ত মহিলাদের আক্ষরিক ক্ষমতায়ন। কেন্দ্র ও রাজ্য প্রদত্ত সমস্ত অধিকার ও সুযোগ সম্পর্কে মহিলাদের সজাগ দৃষ্টি রাখা প্রয়োজন। আজ ফটিকরায়ে ‘মিলন মেলা-২০২২’-এর উদ্বোধন করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। ফটিকরায় দ্বাদশ শ্রেণী বিদ্যালয় মাঠে ৪দিনব্যাপী এই মিলন মেলার আয়োজন করা হয়েছে।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই সদ্য প্রয়াত সাংস্কৃতিক জগতের কিংবদন্তীদের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তারপর মিলন মেলার একটি স্মরণিকার আবরণ উন্মোচন করেন।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, মহিলাদের আর্থিক ক্ষমতায়ন ব্যতীত কোনও অঞ্চলের সর্বাঙ্গীন বাস্তবিক বিকাশ সম্ভব নয়। এই ভাবনা থেকেই মহিলা স্বশক্তিকরণে ও রোজগারের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কাজ করছে রাজ্য সরকার। এর ফলশ্রুতিতে একদিকে যেমন মহিলাদের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা সুনিশ্চিত হচ্ছে তেমনি বৃদ্ধি পাচ্ছে সম্মানজনক সামাজিক অংশীদারিত্ব। চাকরির ক্ষেত্রেও মহিলাদের সম্মানজনক অবস্থান সুনিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে অগ্রণী ভূমিকা নেবে ৩৩ শতাংশ সংরক্ষণের মতো পদক্ষেপ।

আগরতলা সরকারি মেডিক্যাল কলেজে একটি ১০০ শয্যা বিশিষ্ট মা ও শিশু বিভাগ চালু করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। মহিলাদের দ্রুততার সঙ্গে আইনি সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে প্রতিটি থানায় মহিলাদের জন্য থাকবে পৃথক সহায়তা কেন্দ্র। মনোরোগের চিকিৎসার জন্য ৫০ শয্যা বিশিষ্ট দুটি হাসপাতাল স্থাপনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। মহিলাদের রোজগার বৃদ্ধির লক্ষ্যে সহজ শর্তে ঋণ প্রদানে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

প্রায় পৌনে ৩ লক্ষ মহিলা রাজ্যে স্বসহায়ক দল নির্ভর রোজগারের পথ খুঁজে পেয়েছেন। রাজ্যের পশ্চিম ও উত্তর এই দুই জেলায় নেশামুক্তি কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের প্রত্যেক নাগরিকদের অধিকার সুনিশ্চিতকরণে স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করে চলেছে রাজ্য সরকার। সমস্ত সংকীর্ণতার উর্ধ্বে উঠে অন্তিম ব্যক্তি পর্যন্ত সমস্ত প্রকল্পের সুফল পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে রাজ্যব্যাপী কর্মযজ্ঞ চলছে।

সামাজিক ভাতা বৃদ্ধি সহ চা শ্রমিকদের দৈনন্দিন জীবনের সাথে জড়িত বিভিন্ন বিষয় নিরসনে পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। গণবণ্টন ব্যবস্থায় রেশনিং সামগ্রীর সংখ্যার বৃদ্ধি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিশ্রুত পানীয়জল সহ সমস্ত ক্ষেত্রে বিকাশে এসেছে গতি৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, দেশব্যাপী মহিলা ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী দ্বারা গৃহীত ইতিবাচক পদক্ষেপ সদ্য প্রকাশিত বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলে প্রতিফলিত।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিধায়ক সুধাংশু দাস বলেন, নেশামুক্ত রাজ্য গঠনের লক্ষ্যে অঙ্গীকারবদ্ধভাবে কাজ করছে রাজ্য সরকার। নেশার অশুভ প্রভাব থেকে যুব সম্প্রদায়কে মুক্ত রাখতে খেলাধুলার যেমন গুরুত্ব রয়েছে তেমনি মেলার মতো ইতিবাচক কর্মসূচি ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডেরও বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। এদিনের অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক ডা. দিলীপ দাস, ঊনকোটি জিলা পরিষদের সভাধিপতি অমলেন্দু দাস, জেলাশাসক উত্তম কুমার চাকমা প্রমুখ।

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *