দুর্গাপূজার আগেই আগরতলা থেকে মুম্বাই পর্যন্ত চলাচল করবে এক্সপ্রেস ট্রেন

স্টাফ রিপোর্টার, আগরতলা, ৩০ সেপ্টেম্বর।।ত্রিপুরায় যোগাযোগ ব্যবস্থায় নতুন সংযোজন হতে যাচ্ছে আগরতলা-মুম্বাই রেল পরিষেবা। কেন্দ্রীয় রেল মন্ত্রক ইতিমধ্যেই রাজ্যকে এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে অবহিত করেছে। আসন্ন দুর্গাপূজার আগেই লোকমান্য তিলক-কামাক্ষা সাপ্তাহিক এক্সপ্রেস ট্রেনটি আগরতলা থেকে মুম্বাই পর্যন্ত চলাচল করবে।

আগরতলা পর্যন্ত এই এক্সপ্রেস ট্রেন পরিষেবা সম্প্রসারণ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। মুম্বাইয়ের সাথে সরাসরি ট্রেন সংযোগ আমাদের রাজ্যের মানুষদের অনেকাংশে উপকৃত করবে বলে মুখ্যমন্ত্রী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানিয়েছেন।

রাজ্যে রেল পরিষেবার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকার বিভিন্ন সময়ে একাধিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যাতে করে এ রাজ্যের যাত্রী সাধারণ রেল সফরে অনেক বেশি স্বাচ্ছন্দ বোধ করছেন। পাশাপাশি বহিঃরাজ্যের সাথে ত্রিপুরার যোগাযোগ ব্যবস্থা আরো বেশি জোড়ালো হয়ে উঠছে। ত্রিপুরায় বিজেপি জোট সরকার ২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকেই রেল পরিষেবার ক্ষেত্রে একের পর এক জনহিতকর সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। শুধুমাত্র জাতীয় রাজধানী নয়াদিল্লি নয়, অন্যান্য রাজ্যের সাথেও ত্রিপুরা যোগাযোগ ব্যবস্থায় অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে। আগামী কিছুদিনের মধ্যেই বাংলাদেশের সাথেও রেল সংযোগ স্থাপন হতে যাচ্ছে। সবমিলিয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থায় ত্রিপুরা এক নতুন দিশায় এগিয়ে চলছে।

এদিকে শনিবার মহাকরণে সাংবাদিক সম্মেলনে পরিবহন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী রেল মন্ত্রকের এই সিদ্ধান্তের কথা জানান। এই এক্সপ্রেস ট্রেনটি সপ্তাহে প্রতি বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় আগরতলা থেকে রওনা দেবে ও মুম্বাইয়ের লোকমান্য তিলক স্টেশনে পৌঁছাবে শনিবার বিকেল ৪ টা ১৫ মিনিটে। এই এক্সপ্রেস ট্রেনটিই আবার মুম্বাই থেকে রবিবার সকাল ৭ টা ৫০ মিনিটে রওনা হয়ে এবং আগরতলায় এসে পৌঁছাবে মঙ্গলবার রাত ৭টা ৫০ মিনিটে। যাত্রাপথে সময় লাগবে ২ দিন ৭ ঘন্টা।

পরিবহন মন্ত্রী জানান, এই যাত্রাপথে এক্সপ্রেস ট্রেনটি আগরতলা এবং গৌহাটির মধ্যে মোট ৭টি স্টেশনে থামবে। এই ৭টি স্টেশন হল আমবাসা, ধর্মনগর, বদরপুর, নিউ হাফলং, লামডিং, হোজাই ও চপারমুখ। এই রেল পরিষেবা চালু হলে চাকুরি প্রার্থী, রোগী, শিক্ষার্থী, পর্যটক, ব্যবসা বাণিজ্য ইত্যাদি ক্ষেত্রে রাজ্যের মানুষ লাভবান হবেন। আগরতলা-মুম্বাই রেল পরিষেবা চালুর উদ্যোগের জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং কেন্দ্রীয় রেল মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবকে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে পরিবহনমন্ত্রী শ্রী চৌধুরী আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

সাংবাদিক সম্মেলনে পরিবহণ মন্ত্রী আরও জানান, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সারাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে সুদৃঢ় করার উপর গুরুত্ব দিয়েছেন। ২০১৮ সালের পর প্রধানমন্ত্রী রাজ্যকে হীরা মডেল দেওয়ার ঘোষনা করেছিলেন। এই হীরা মডেলের উপর দাঁড়িয়েই রাজ্যের যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রভূত উন্নতি হয়েছে। রাজ্য সরকারও উন্নত ত্রিপুরা গড়ার লক্ষ্যে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার উপর গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে। তিনি জানান, রাজ্যের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের ফলেই বর্তমানে রাজ্য থেকে ১১টি এক্সপ্রেস ট্রেন দেশের বিভিন্ন রাজ্যের মধ্যে চলাচল করছে। এছাড়াও পাঁচটি লোকাল ট্রেন রাজ্যে চালু রয়েছে।

পরিবহনমন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিক প্রচেষ্টায় দেশের বিভিন্ন রাজ্যের ৫০৮টি রেল স্টেশনকে অমৃত ভারত স্টেশন প্রকল্পের আওতায় এনে নতুন করে সাজানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ১১টি রেল স্টেশন এই প্রকল্পের আওতায় রয়েছে। যার জন্য বায় হবে ৫,১০০ কোটি টাকা। রাজ্যের তিনটি রেল স্টেশনও অমৃত ভারত স্টেশন প্রকল্পের আওতায় রয়েছে। এগুলি হল ধর্মনগর, কুমারঘাট এবং উদয়পুর রেল স্টেশন। এই তিনটি স্টেশনের উন্নয়নের জন্য ব্যয় করা হবে ৯৬ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা। তিনি জানান, খুব শীঘ্রই বাংলাদেশের সাথে রেল যোগাযোগ চালু হবে। আগরতলার রেল স্টেশনে আধুনিক চলমান শিল্পির উদ্বোধন করা হবে। সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পরিবহন সচিব ইউ কে ঢাকমা, অতিরিক্ত সচিব সুব্রত চৌধুরী প্রমূখ।

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *