জেলেনস্কি বলেছেন, ‘আমরা হুমকি মেনে নিতে প্রস্তুত নই’

অনলাইন ডেস্ক, ৯ মার্চ ।। চলমান যুদ্ধের মধ্যেই রাশিয়া ও ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা তুরস্কে আলোচনায় বসতে যাচ্ছেন। রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ ও ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্র কুলেবা তুরস্কে বৈঠক করবেন।

রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছে। লাভরভ ও কুলেবার মধ্যে চলতি সপ্তাহেই বৈঠকটি হতে পারে বলে জানানো হয়েছে।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। ইউক্রেনে রুশ হামলা শুরুর পর এই প্রথম দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ে বৈঠক হতে যাচ্ছে।

রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা আজ সকালে বলেছেন, লাভরভ একটি আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক ফোরামের আয়োজনে যোগ দিতে তুরস্কের আন্টালিয়ায় যাবেন। সেখানেই তাঁর সঙ্গে কুলেবার বৈঠকের পরিকল্পনা করা হয়েছে।

মারিয়া জাখারোভার উদ্ধৃতি দিয়ে এই খবর প্রচার করেছে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম আরআইএ নভোস্তি।

লাভরভ ও কুলেবার মধ্যকার বৈঠকটির প্রস্তাবক তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলিত সাভাসগলু। তিনি একটি ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের প্রস্তাব দিয়েছেন। অর্থাৎ, লাভরভ ও কুলেবার সঙ্গে বৈঠকে তিনিও অংশ নিতে চান।

এখন পর্যন্ত যে তথ্য জানা গেছে, সে অনুযায়ী বৈঠকটি কাল বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) অনুষ্ঠিত হবে। পরদিন ১১ মার্চ কূটনৈতিক ফোরামের অনুষ্ঠান হওয়ার কথা।

রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রতিনিধিদের মধ্যে বেলারুশ সীমান্তে একাধিক দফার শান্তি আলোচনা ইতিমধ্যে অনুষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু এই আলোচনার অগ্রগতি সামান্য।

ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযান আজ ১৪তম দিনে গড়িয়েছে। রাজধানী কিয়েভসহ ইউক্রেনের বেশ কয়েকটি শহরে আজ সকালে ‘এয়ার সাইরেন’ বাজানো হয়। দেশটির কর্তৃপক্ষ বলছে রাজধানী কিয়েভের উত্তরপশ্চিম দিকের তিনটি শহর বুচা, হোস্টোমেল এবং ইরপিনে অব্যাহতভাবে রাশিয়ার বোমাবর্ষণ চলছে।

ওদিকে ন্যাটোর আচরণে হতাশ হয়ে সুর নরম করেছেন জেলেনস্কি।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য হতে আর ইচ্ছুক নন তারা। একইসঙ্গে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দোনেৎস্ক এবং লুহানস্ক অঞ্চল নিয়েও রাশিয়ার সঙ্গে আলেচনায় রাজি হয়েছেন তিনি।

সংবাদমাধ্যম এবিসি টেলিভিশনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে একথা জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। বুধবার (৮ মার্চ) দেওয়া ওই সাক্ষাৎকারে জেলেনস্কি জানিয়েছেন, তিনি আর ন্যাটোর সদস্য হতে ইচ্ছুক নন। তিনি বুঝে গেছেন, ইউক্রেনকে গ্রহণ করতে ন্যাটো প্রস্তুত নয়। দোভাষীর মাধ্যমে দেওয়া ওই সাক্ষাৎকারে জেলেনস্কি বলেন, ‘আমি এমন একটা দেশের প্রেসিডেন্ট থাকতে চাই না, যারা হাঁটু গেড়ে ভিক্ষা চায়’।

জেলেনস্কি আরও বলেছেন, তিনি বুঝেছেন যে, ন্যাটো রাশিয়াকে ক্ষুব্ধ করবে না। তারা এই বিতর্কিত বিষয়ের মধ্যে ঢুকতে ভয় পাচ্ছে।

সাক্ষাৎকারে জেলেনস্কি বলেছেন, তিনি দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক নিয়ে আলোচনায় বসতে রাজি আছেন।

তার দাবি, ইউক্রেনকে নিরাপত্তার গ্যারান্টি দিতে হবে। জেলেনস্কি বলেছেন, ‘ওই দু’টি অঞ্চলকে শুধুমাত্র রাশিয়াই স্বীকৃতি দিয়েছে। তবে আমরা অবশ্যই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে সমঝোতায় পৌঁছাতে পারি’।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের বক্তব্য, ‘আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, ওই অঞ্চলে মানুষ কীভাবে বসবাস করবে। তারা ইউক্রেনের অংশ থাকতে চায়। ইউক্রেনের মানুষ তাদের ছেড়ে দিতে রাজি কি না সেটিও দেখতে হবে। তাই প্রশ্নটা শুধু তাদের স্বীকৃতি দেওয়া নিয়ে নয়, বিষয়টি বেশ জটিল’।

জেলেনস্কি আরও বলেছেন, ‘আমরা হুমকি মেনে নিতে প্রস্তুত নই। যেটা দরকার, তা হলো, প্রেসিডেন্ট পুতিন আমাদের সঙ্গে কথা বলুন’।

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *