স্টাফ রিপোর্টার, আগরতলা, ২১ জুলাই।। জিবিপি হাসপাতালের ইমারজেন্সি মেডিসিন ও কার্ডিওলজি বিভাগের চিকিৎসকগণ এক রোগীকে মৃত্যুমুখ থেকে ফিরিয়ে আনলেন। তেলিয়ামুড়ার উত্তর মাহারাণীর বাসিন্দা হরেন্দ্র দেববর্মা (৭০) গত সাত দিন ধরে পেট ফোলা, কাশি ও শ্বাসকষ্টের সাথে দুই পা ফোলা নিয়ে জিবিপি হাসপাতালের ইমারজেন্সিতে আসেন।
জিবিপি হাসপাতালের ইমারজেন্সি বিভাগের চিকিৎসক ডাঃ শীর্ষেন্দু ধর ও জুনিয়র রেসিডেন্ট চিকিৎসক ডাঃ প্রজ্ঞা বর্ণালী শর্মা জরুরী ভিত্তিতে রোগীর চিকিৎসা শুরু করেন। রোগীকে দ্রুত অক্সিজেন ও স্যালাইন দিয়ে স্থিতিশীল অবস্থায় আনার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু রোগীর রক্তচাপ অনেক কম থাকায় ইমারজেন্সি বিভাগের চিকিৎসক ডাঃ শীর্ষেন্দু ধর রোগীকে আলট্রাসাউন্ড পরীক্ষা করান।
এই পরীক্ষার রিপোর্টে দেখা যায় রোগীর হৃদপিন্ডের ঠিক বাইরে প্রচুর পরিমাণে রক্তের মতো তরল জমে আছে যা হৃদপিন্ডকে সংকোচিত ও প্রসারিত হতে বাধা দিচ্ছে। চিকিৎসক তৎক্ষণাৎ কনসালটেন্ট কার্ডিওলজিস্ট চিকিৎসক ডাঃ অনিন্দ্য সুন্দর ত্রিবেদীর সাথে কথা বলে রোগীকে কার্ডিওলজি বিভাগে স্থানান্তরিত করেন। সেখানে কার্ডিওলজিস্ট ডাঃ অনিন্দ্য সুন্দর ত্রিবেদী রোগীর অন্যান্য পরীক্ষা নিরীক্ষার রিপোর্ট দেখে কার্ডিয়াক ট্যাম্পোনেড নামক ঝুঁকিপূর্ণ রোগ নির্ণয় করেন।
চিকিৎসক রোগীর পরবর্তী ত্রিশ মিনিট থেকে এক ঘন্টার মধ্যে মৃত্যুর ঝুকি হতে পারে অনুধাবন করে জরুরী ভিত্তিতে গত ১৮ জুলাই ক্যায়েটার গাইডেড পেরিকার্ডিওসেন্টেসিস প্রক্রিয়ায় ২০ মিনিটের মধ্যে রোগীর হৃদপিন্ডে জমে থাকা রক্তের মত তরল পদার্থ বের করে রোগীর জীবন রক্ষা করেন। এই অপারেশনের সময় কনসালটেন্ট কার্ডিওলজিস্ট ডাঃ অনিন্দ্য সুন্দর ত্রিবেদীর সঙ্গে ছিলেন ইমারজেন্সি বিভাগের ডাঃ অবন্তিকা নাথ, ডাঃ গোপীনাথ বর্মণ, কার্ডিওলজিস্ট বিভাগের চিকিৎসক ডাঃ শ্রেয়সী দেব, ডাঃ সম্রাট দেব প্রমুখ।
টেকনিশিয়ান হিসেবে ছিলেন কিষাণ রায়, অনবাহাদুর জমাতিয়া ও দেবব্রত দেবনাথ। বর্তমানে রোগী ইমারজেন্সি মেডিসিন আইসিইউতে চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে রয়েছেন। মৃত্যুমুখ থেকে ফিরিয়ে এনে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে সফলভাবে রোগীর জীবন বাঁচানোর জন্য রোগীর পরিবার পরিজনরা চিকিৎসকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। স্বাস্থ্য দপ্তরের অধিকর্তা এক প্রেস রিলিজে এই সংবাদ জানিয়েছেন।