অনলাইন ডেস্ক, ৫ মার্চ।। ইউক্রেনের মারিওপোল এবং ভলনোভাখা শহরের বেসামরিক নাগরিকদের দেশ ছাড়ার সুযোগ দিয়ে স্বল্প সময়ের জন্য সাময়িক যুদ্ধ বিরতি ঘোষণা করেছে রাশিয়া। কিন্তু মারিওপোলের মোট জনসংখ্যা প্রায় সাড়ে ৪ লাখ। ফলে রাশিয়া যুদ্ধবিরতির যে স্বল্প সময় বেঁধে দিয়েছে তাতে সেখান থেকে নিরাপদে ৭ হাজার থেকে ৯ হাজার মানুষকে সরিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে। সেই হিসেবে সেখানকার মাত্র ২ শতাংশেরও কম মানুষকে সেখান থেকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া যাবে।
বিবিসিকে এমন তথ্য জানিয়েছেন মারিউপোলের ডেপুটি মেয়র সেরহি অরলোভ। বিবিসিকে তিনি বলেন, যুদ্ধবিরতির সময়টি রাত পর্যন্ত করার জন্য আলোচনায় বলা হয়েছিল। কিন্তু যুদ্ধবিরতিটি হয়েছে মাত্র কয়েক ঘণ্টার জন্য।
তবে যুদ্ধবিরতির পরপরই আমরা জনগণকে সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু করেছি। আমরা ৫০টি বাস জোগাড় করেছি যাতে খুব বেশি হলে ৫ থেকে ৬ হাজার মানুষকে জাপোরিঝিয়াতে সরিয়ে নেওয়া যাবে। আর কিছু মানুষ প্রাইভেটকারে যেতে পারবে।
সেই হিসেবে সব মিলিয়ে ৭ থেকে ৯ হাজার মানুষকে এই সাময়িক যুদ্ধবিরতির সময় সরিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে। তিনি বলেন, আমরা কোনো ট্রেনের ব্যবস্থা করতে পারছি না। কারণ রাশিয়ান বাহিনীরা আগেই রেললাইন ধ্বংস করে দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, রাশিয়ার পক্ষ থেকে এই যুদ্ধবিরতি আগামীকাল পর্যন্ত বর্ধিত করার কোনো নিশ্চয়তা পাওয়া যায়নি। তবে আমরা সেটার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, সাময়িক এই যুদ্ধবিরতি স্থানীয় সময় শনিবার সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ৭ ঘণ্টা স্থায়ী হবে।
তবে আল জাজিরার প্রতিবেদনে সাময়িক যুদ্ধবিরতির সময়কাল ৫ ঘণ্টা বলে জানানো হয়েছে। স্থানীয় সময় শনিবার বেলা ১১টা থেকে বেসামরিক লোকজনদের সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। করিডোরের রুট হলো মারিওপোল থেকে পশ্চিমের একটি শহর জাপোরিঝিয়া পর্যন্ত।
করিডোরের জন্য ব্যবহৃত বাসগুলো শহরের তিনটি স্থান থেকে ছেড়ে যাবে। এছাড়া ব্যক্তিগত পরিবহনগুলোকেও ওই রুটে ভ্রমণের অনুমতি দেওয়া হবে।
সিটি কাউন্সিলের পক্ষ থেকে চালকদের তাদের যানবাহনে থাকা সমস্ত জায়গার পূর্ণ ব্যবহার করতে বলা হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে নির্দেশনার বাইরের অন্য কোনো রুট ব্যবহার করা থেকে চালকদের কঠোরভাবে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
আজভ সাগরের তীরের বন্দর শহর মারিওপোল এবং ভলনোভাখা শহরের বাসিন্দাদের দেশ ছাড়ার সুযোগ দিয়ে সাময়িক ভাবে এই যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিয়েছে রাশিয়া। দশম দিনে এসে এই সাময়িক যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হল রাশিয়ার পক্ষ থেকে।
চলতি সপ্তাহে বেলারুশে দ্বিতীয় দফার শান্তি বৈঠকের পরে রাজধানী কিয়েভসহ ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরের অসামরিক বাসিন্দাদের নিরাপদে সরে যাওয়ার সুযোগ দিতে ঐকমত্য হয়েছিল। তারই ভিত্তিতে মস্কোর এই সিদ্ধান্ত বলে মনে করা হচ্ছে।
ইউক্রেনের দক্ষিণের বন্দর শহর খারসেন দখলের পর রাশিয়ার টার্গেট এবার আরও দুটি গুরুত্বপূর্ণ বন্দর ওডেসা ও মারিওপোলকে দখল করা। ওই দুই শহরে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমানহানায় বেশ কয়েকজন বেসামরিক নাগরিকের মৃত্যুর খবরও মিলেছে।