বেসামরিক এলাকায় রুশ বাহিনীর বোমা বর্ষণের সংবাদকে ‘ভুয়া খবর’ বলে উল্লেখ করেছেন পুতিন

অনলাইন ডেস্ক, ৫ মার্চ।। জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শুলজের সঙ্গে আলোচনার সময় ইউক্রেনে চলমান সামরিক অভিযানে দেশটির রাজধানী কিয়েভ বা অন্য কোনো শহরের বেসামরিক এলাকায় রুশ বাহিনীর বোমা বর্ষণের সংবাদকে ‘ভুয়া খবর’ বলে উল্লেখ করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি বলেছেন, রুশ সেনারা কিয়েভ বা অন্য কোনো শহরে বোমা বর্ষণ করেনি।

শনিবার টেলিফোনে দুই দেশের শীর্ষ দুই নেতার মধ্যে ওই আলোচনা হয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।

এছাড়া বেলারুশে রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রতিনিধিদের মধ্যে যে বৈঠক শুরু হয়েছে, সেটি ইউক্রেনে চলমান সামরিক অভিযান বন্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে বলেও জার্মান চ্যান্সেলরকে জানিয়েছেন পুতিন। তবে এক্ষেত্রে শর্ত হলো- কিয়েভকে অবশ্যই মস্কোর শর্তসমূহ পূরণের প্রতিশ্রুতি দিতে হবে।

টেলিফোনে শুলজকে পুতিন বলেন, কিয়েভের জন্য মস্কোর শর্ত মূলত চারটি। এগুলো হলো- একটি নিরপেক্ষ ও পরমাণু অস্ত্রমুক্ত দেশ হিসেবে ইউক্রেনের অবস্থান স্পষ্ট করা, দেশটি থেকে উগ্র জাতীয়তাবাদ নির্মূল, ক্রিমিয়াকে রাশিয়ার অংশ হিসেবে স্বীকার করে নেওয়া এবং দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় দুই ভূখণ্ড দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া।

পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য কয়েক বছর আগে আবেদন করে ইউক্রেন এবং এই ব্যাপারটিকে ঘিরে দ্বন্দ্ব শুরু হয় রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে।

এর মধ্যে ন্যাটো ইউক্রেনকে পূর্ণ সদস্যপদ না দিলেও ‘সহযোগী দেশ’ হিসেবে মনোনীত করায় দ্বন্দ্বের তীব্রতা আরও বাড়ে। ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য আবেদন প্রত্যাহারে ইউক্রেনের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে গত দুই মাস রাশিয়া-ইউক্রেন সীমান্তে প্রায় দুই লাখ সেনা মোতায়েন রেখেছিল মস্কো।

কিন্তু এই কৌশল কোনো আসেনি। উপরন্তু এই দুমাসের প্রায় প্রতিদিনই যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা অভিযোগ করে গেছে- যে কোনো সময় ইউক্রেনে হামলা চালাতে পারে রুশ বাহিনী।

অবশেষে গত ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দুই ভূখণ্ড দনেতস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় রাশিয়া; এবং তার দুদিন পর, ২৪ তারিখ ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

রাশিয়া ও ইউক্রেনের সরকারি কর্মকর্তারা অবশ্য ইতোমধ্যে সংলাপ শুরু করেছেন। সাবেক সোভিয়েত রাষ্ট্র বেলারুশের উদ্যোগে দেশটির ইউক্রেন সীমান্তবর্তী শহর গোমেলে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি প্রথম দফা বৈঠক হয় দুই দেশের প্রতিনিধিদলের মধ্যে।

তার পর দ্বিতীয় দফা বৈঠক হয় বৃহস্পতিবার। ওই বৈঠকে ইউক্রেনের শহর এবং গ্রাম থেকে বেসামরিক লোকজনকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য মানবিক করিডোর চালুর বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছেন রুশ ও ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা।

খুব শিগগিরই দুই দেশের প্রতিনিধিদের মধ্যে তৃতীয় দফা বৈঠক হবে বলে এএফপিকে নিশ্চিত করেছে রাশিয়া। রুশ প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা এ বিষয়ে বলেন, ‘আমরা আশা করছি, কিয়েভ একটি যৌক্তিক ও গঠনমূলক অবস্থান গ্রহণ করবে’।

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *