ঊনকোটি জেলায় ১০টি প্রকল্পের উদ্বোধন ও ৫টি শিলান্যাস করলেন মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা

কুমারঘাট, ৫ জুন : বৃহস্পতিবার ঊনকোটি জেলার কুমারঘাট সফর করলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডাঃ) মানিক সাহা। এদিন কুমারঘাটে কিছু সরকারী প্রকল্পের উদ্বোধন এবং শিলান্যাস অনুষ্ঠানে যোগ দেন তিনি। সাথে ছিলেন মন্ত্রী সান্ত্বনা চাকমা সহ জেলা প্রশাসনের পদস্থ অধিকারীকরা।

পেঁচারথল এবং পাবিয়াছড়া বিধানসভা এলাকার উন্নয়নে সরকারীভাবে দশটি নতুন নির্মিত প্রকল্পের উদ্বোধন এবং পাঁচটি প্রকল্পের শিলান্যাস অনুষ্ঠানে যোগ দিতেই এদিন কুমারঘাটে আসেন মুখ্যমন্ত্রী। এই উপলক্ষে কুমারঘাটের গীতাঞ্জলি কমিউনিটি হলে এদিন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ঊনকোটি জেলা প্রশাসন। সেখানে ভার্চুয়ালী বোতাম টিপে সংশ্লিষ্ট ১০টি প্রকল্পের উদ্বোধন এবং ৫টি প্রকল্পের শিলান্যাস করেন মুখ্যমন্ত্রী।

বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের উন্নয়নে কাজ করে চলেছে বর্তমান সরকার। চলতি বছরের শুরু থেকে এখনো পর্যন্ত ৫৭৮ কোটি টাকার উন্নয়নমূলক প্রকল্পের কাজ হয়েছে ত্রিপুরায়। রাজ্যের চুরাইবাড়ী থেকে সাব্রুম পর্যন্ত এই উন্নয়নের কাজ হচ্ছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। যার সুফল পাচ্ছেন রাজ্যের মানুষ।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, অনেক সরকারী সুযোগ সুবিধা রয়েছে সেসবের বিষয়ে এখনও অবগত নন রাজ্যের প্রতিটি মানুষ। ফলে অনেক সময় সরকারী সুযোগ পেতে গিয়ে বঞ্চিত হন অনেকে। তিনি বলেন, প্রতি ঘরে সুশাসন ব্যাপকভাবে সফল হয়েছে ত্রিপুরায়, তাই দ্বিতীয়বার এটা শুরু করা হয়েছে।

বক্তব্য রাখতে গিয়ে পূর্বতন সরকারকে এদিন বিঁধলেন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা। তিনি বলেন, সরকারী সুবিধা পাওয়া মানুষের অধিকার। আর সেই সুবিধা পেতে গিয়ে আগে আন্দোলনের জন্য রাস্তায় নামানো হতো মানুষকে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে সরকারী কর্মচারীদের মহার্ঘ্যভাতা থেকে সাধারণ মানুষের সরকারী সুবিধা, কোন কিছুর জন্যই আর আন্দোলন করতে হয় না।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সাধারণ মানুষের সমর্থন থাকায় প্রতিনিয়ত এমনভাবে উন্নয়নের কাজ এগিয়ে চলছে ত্রিপুরায়। ফলে রাজ্য থেকে বিজেপি সরকারকে আর কোনদিন কেউ ক্ষমতাচ্যুত করতে পারবে না বলেও এদিন আত্মবিশ্বাসের সুরে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, বিজেপির শাসনে সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীর সঙ্গে সরকারের মৌ স্বাক্ষরের ভিত্তিতে অস্ত্র জমা দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছে অনেক জঙ্গি। এতে ত্রিপুরা বর্তমানে সন্ত্রাসবাদমুক্ত হয়েছে বলে দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী।

এদিন ভাষণ দিতে গিয়ে সরকারের সমালোচকদেরকেও কড়া হুঁশিয়ারী দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারকে কালিমালিপ্ত করতে অপচেষ্টা চালাচ্ছে একটি মহল। আমরা সবাইকে নিয়ে চলতে চাই, কিন্তু কেউ চলতে না চাইলে কিছু করার নেই। রাজ্যে কোন অশান্তি সৃষ্টি করার চেষ্টা হলে সরকার কঠোর পদক্ষেপ নেবে বলে এদিন প্রকাশ্যেই কড়া ভাষায় হুঁশিয়ারী দিলেন তিনি।

কিন্তু বিরোধী, নাকি শরিক দলকে এদিন নিশানা করলেন মুখ্যমন্ত্রী।এনিয়ে তুঙ্গে জল্পনা। কেননা মাত্র ক’দিন আগেই গোমতী জেলায় সরকারের শরিক দল তিপ্রা মথার নেতৃত্বে সরকারেরই প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে জেলা শাসকের ছবিতে পা মারানো আন্দোলনের ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছেন রাজ্যের মানুষ।

এদিনের অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরের মন্ত্রী তথা পেঁচারথল এলাকার বিধায়ক সান্ত্বনা চাকমা, জেলা শাসক ডঃ তমাল মজুমদার, জেলা পুলিশ সুপার সুদাম্বিকা আর, উপজাতি কল্যান দপ্তরের সচিব কে শশী কুমার ও বিধায়ক ভগবান দাস সহ অন্যান্যরা।

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *