অন্যের ঘর আলোকিত করতে দিন রাত পরিশ্রম করে চলেছেন মৃৎশিল্পী অজিত রুদ্রপাল

খোয়াই, ২১ অক্টোবর : আলোর উৎসব দীপাবলিতে মাটির প্রদীপ জ্বেলে অন্যের ঘর আলোকিত করতে দিন রাত পরিশ্রম করে চলেছেন মৃৎশিল্পী অজিত রুদ্রপাল। দুই পুরুষের পারিবারিক ব্যবসা শুরু করেন যখন তাঁর বয়স দশ। বাবার হাত ধরে হাতেখড়ি। বাবা হারাধন রুদ্র পাল গত হয়েছেন আট বছর আগে। কিন্তু অজিত রুদ্র পাল আগলে রেখেছেন পৈত্রিক জীবিকা। জীবন নির্বাহের পথও বেছে নিয়েছে মৃৎশিল্পে। নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা। কোনো রকম দিন গুজরান করে চলেছেন মৃৎশিল্পকে ভর করেই।

সংসারের অভাব অনটন লেগেই থাকে, তবু হাল ছেড়ে দেননি অজিত বাবু। নিপুন হাতে গড়ে তুলছেন মাটির প্রদীপ। এর ফাঁকে ফাঁকে উত্তর দিতে দিতে জানিয়েছেন কিভাবে সারা বছর মাটির বিভিন্ন ধরনের সামগ্রী তৈরি ও বিক্রি করে চলেছেন মৃৎশিল্পী অজিত রুদ্র পাল। কথা হচ্ছিল উনার বাড়িতে বসেই। খোয়াই ব্লকের সোনাতলা পঞ্চায়েতস্থিত ভূমিহীন কলোনী যাওয়ার পথে বাঁদিকে ছোট্ট মাটির ঘরে অজিত রুদ্রপালের সংসার। দিন যায় রাত কাটে নির্ঘুম, মাথায় একরাশ চিন্তা, আকাশ জুড়ে কালো মেঘের ভ্রুকুটি। যদি সময়মতো পাইকারি বাজারে সরবরাহ করতে পারে মাটির প্রদীপ তবেই কিনে দিতে সক্ষম হবেন ছোট সন্তানের খাতা-কলম, ছোট বোনের ভাই ফোঁটার শাড়ি। দইয়ের ভাঁড় , বিভিন্ন আকারের ঘট-সড়া, ধূপতি, থাল-গ্লাস, খেলনা ইত্যাদি বানিয়ে রঙ করে তারপর পুড়িয়ে তৈরি করতে হয়। এরপর বিভিন্ন বাজারে পাইকারি দোকান মালিকদের কাছে পৌঁছে দিতে হয় অথবা কখনো বিভিন্ন মেলায় বিক্রি করেন মাটির তৈরী খেলনা সামগ্রী।

অনেকবার শুনেছেন আশার বাণী, সরকারী সহায়তা পাবেন বলে জানান তিনি। গত লোকসভা নির্বাচনের আগে খোয়াই মহকুমা সদর থেকে নির্বাচনী প্রচারে আসেন শাসক দলীয় নেতাকর্মীরা। পুরসভা কার্যালয়ে সরকারি আর্থিক সহায়তা পেতে আবেদন জমা দিতে বলেন শাসক দলীয় নেতৃত্ব। কিন্তু সহায়তা প্রাপ্তির বিষয়টি এখনো বিশ বাঁও জলে।ভোট শেষ হতেই নেতা মন্ত্রীর দেখা নেই, থাকে শুধু আশ্বাস এবং প্রতিশ্রুতি, অভাব ঘুচেনা মৃৎশিল্পী অজিতদের। তবুও আশায় বুক বেঁধে পৈত্রিক শিল্প আঁকড়ে ধরে নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখেন মৃৎশিল্পী অজিত রুদ্রপাল।

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *