আগরতলা, ৩০ ডিসেম্বর।। মুল্যবোধের বিকাশে যারা বই পড়তে ভালবাসেন তাদের গ্রন্থাগারমুখী করে তোলার উদ্যোগ নিতে হবে। এজন্য প্রয়োজন গ্রন্থাগারে পাঠকদের পছন্দের ও প্রয়োজনীয় বই রাখা। গ্রন্থাগারে পাঠকদের সংখ্যা বাড়াতে প্রয়োজনে প্রযুক্তিকেও কাজে লাগাতে হবে। আজ সচিবালয়ের ২নং সভাকক্ষে স্টেট লাইব্রেরি প্ল্যানিং কমিটির সভায় মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন।
সভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, গ্রন্থাগারে বই কেনার ক্ষেত্রে পাঠকদের চাহিদা ও প্রয়োজনীয়তাকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিতে হবে। এতে বেশী সংখ্যায় সাধারণ পাঠকরাও গ্রন্থাগারমুখী হতে উৎসাহিত হবেন। পাঠকদের গ্রন্থাগারমুখী করতে তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের পরিচালনায় যেসব এলইডি স্ক্রিনগুলি বিভিন্ন জায়গায় চালু রয়েছে সেগুলির মাধ্যমে গ্রন্থাগারগুলির বিভিন্ন উদ্যোগসমূহ তুলে ধরার উপরও সভায় মুখ্যমন্ত্রী গুরুত্ব আরোপ করেন।
সভায় মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা) মানিক সাহা বলেন, সরকার ডিজিটাইজেশনের উদ্যোগ হিসেবে রাজ্যে ই-আফিস, ই-ক্যাবিনেট, ই-বিধানসভা চালু করেছে। রাজ্যের গ্রন্থাগারগুলিতেও সদস্য সংখ্যা বাড়াতে অনলাইনে সদস্যপদ গ্রহণের ব্যবস্থা চালু করার জন্য মুখ্যমন্ত্রী সংশ্লিষ্টদের পরামর্শ দেন। গ্রন্থাগারের পুরোনো বইগুলির রক্ষনাবেক্ষণে আধুনিক পদ্ধতি গ্রহণের উপরও সভায় মুখ্যমন্ত্রী গুরুত্ব আরোপ করেন। সভায় মুখ্যমন্ত্রীর সচিব ড. প্রদীপ কুমার চক্রবর্তী, রাজা রামমোহন রায় লাইব্রেরি ফাউন্ডেশনের ডিরেক্টর জেনারেল প্রফেসর বি ভি শর্মা, বীরচন্দ্র স্টেট সেন্ট্রাল লাইব্রেরির হেড লাইব্রেরিয়ান দিলীপ কুমার দাস সহ কমিটির সদস্য সদস্যাগন আলোচনায় আংশ নেন।
সভায় উচ্চশিক্ষা দপ্তরের অধিকর্তা এন সি শর্মা রাজ্যের গ্রন্থাগারগুলির ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা ও বিভিন্ন নতুন উদ্যোগসমূহ নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা করেন। তিনি জানান, রাজ্যে মোট ২৮টি পাবলিক লাইব্রেরি রয়েছে। এরমধ্যে ১টি স্টেট সেন্ট্রাল লাইব্রেরি, ৭টি ডিস্ট্রিক্ট লাইব্রেরি, ১২টি সাব ডিভিশন্যাল লাইব্রেরি, ৫টি ব্লক লাইব্রেরি, ১টি টাউন লাইব্রেরি এবং ২টি রুরাল লাইব্রেরি রয়েছে।
সভায় তিনি এই পাবলিক লাইব্রেরিগুলির সদস্য ও বইয়ের সংখ্যা সংক্রান্ত বিষয়গুলি তুলে ধরে জানান, কুমারঘাট সাব ডিভিশন্যাল পাবলিক লাইব্রেরি, ফটিকরায় এবং জিরানীয়া সাব ডিভিশন্যাল পাবলিক লাইব্রেরি খোলা হয়েছে। আগরতলার বীরচন্দ্র স্টেট সেন্ট্রাল লাইব্রেরি এবং কৈলাসহরের ঊনকোটি ডিস্ট্রিক্ট লাইব্রেরির লাইব্রেরি অটোমেশনের কাজ শেষ হয়েছে। এখন পর্যন্ত ১৮৪ জন গ্রন্থাগার ব্যবহারকারী সরকারি চাকুরি পেয়েছেন।
অধিকর্তা আরও জানান, আগরতলার বীরচন্দ্র স্টেট সেন্ট্রাল লাইব্রেরির চাকুরি প্রত্যাশী পাঠকদের জন্য ক্যারিয়ার গাইডেন্স বিষয়ক অনুপ্রেরনামূলক লেকচার শুরু করা হয়েছে। বীরচন্দ্র স্টেট সেন্ট্রাল লাইব্রেরিতে পাঠকদের সুবিধার্থে রাজা রামমোহন রায় রিডিং কর্ণার গড়ে তোলা হয়েছে। দিব্যাঙ্গজনদের জন্য র্যাম্পের সুবিধাও সম্প্রসারিত করা হয়েছে। এছাড়াও রাজা রামমোহন রায়ের ২৫০তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে রাজ্যের ৮টি জেলায় মহিলা স্বশক্তিকরণের উপর জনসচেতনমূলক র্যালী আয়োজিত হয়েছে।
অধিকর্তা আরও জানান, মোহনপুর সাব ডিভিশন্যাল পাবলিক লাইব্রেরি নির্মান এবং কৈলাসহরের ঊনকোটি ডিস্ট্রিক্ট লাইব্রেরিতে দিব্যাঙ্গজনদের জন্য বিশেষ শৌচাগার তৈরীর কাজ প্রায় শেষের পথে। তাছাড়া উদয়পুরের নজরুল গ্রন্থাগারের আধুনিকীকরণের উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে। রাজ্যে আরও ১২টি জনগ্রন্থাগার তৈরী করার প্রস্তাবিত নতুন উদ্যোগসমূহ সভায় আলোচনায় প্রাধান্য পায়।