স্টাফ রিপোর্টার, আগরতলা, ১০ আগস্ট।। আজ থেকে পশ্চিম ত্রিপুরা জেলায় বালিকা মঞ্চ প্রকল্পের সূচনা করা হয়। এই প্রকল্পে জেলার প্রতিটি উচ্চ এবং উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বালিকাদের নিয়ে অ্যামপাওয়ার্ড কমিটি গঠন করা হবে। তারা লেখাপড়া সহ নানা বিষয়ে আলোচনা করবে। আজ মুক্তধারা অডিটোরিয়ামে এক সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠানে সমাজকল্যাণ ও সমাজ শিক্ষামন্ত্রী টিংকু রায় এই প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। পাশাপাশি অনুষ্ঠিত হয় বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও প্রকল্পের পশ্চিম জেলাভিত্তিক কর্মশালা।
বালিকা মঞ্চ প্রকল্পের উদ্বোধন করে সমাজকল্যাণমন্ত্রী টিংকু রায় বলেন, রাজা সরকারের উদ্দেশ্য নারীদের সামগ্রিক উন্নয়ন। কিন্তু এক্ষেত্রে নারীদেরও লক্ষ্য, ইচ্ছা ও একাগ্রতা থাকতে হবে। রাজ্য সরকার মহিলাদের নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য, পুষ্টির বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে। তিনি বলেন, বর্তমানে আমাদের দেশের রাষ্ট্রপতি একজন মহিলা। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় ১১ জন মহিলা মন্ত্রী রয়েছেন। অলিম্পিয়ান দীপা কর্মকার, পদাশ্রী দিব্যাঙ্গ পর্বতারোহী অর্ণিমা সিনহা, পদ্মাশ্রী সমাজসেবী শুভাষিনী মিশ্রা প্রমুখ আজ মেয়েদের কাছে দৃষ্টান্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি বলেন, নারীদের সুরক্ষায় রাজ্যে মহিলা থানার সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে। রয়েছে মহিলা পুলিশ ভলান্টিয়ার। চালু করা হয়েছে ওয়ান স্টপ সেন্টার। চালু রয়েছে মিশন বাংলা প্রকল্প। আজ চালু করা হলো বালিকা মঞ্চ।
সমাজকল্যাণমন্ত্রী বলেন, রাজ্যে বর্তমানে ৪০ হাজার স্বসহায়ক দল রয়েছে। স্বসহায়ক দলের মহিলারা যাতে নিজ পায়ে দাঁড়াতে পারেন সে লক্ষ্যে প্রায় ৪০০ কোটি টাকার ঋণ দেওয়া হয়েছে। আগে নবম শ্রেণীর এসসি এবং এসটি ছাত্রীদের বাইসাইকেল দেওয়া হতো। এখন নবম শ্রেণীর প্রত্যেক ছাত্রীদের বাইসাইকেল দেওয়া হয়। খেলাধুলায় আজ বালিকারা এগিয়ে রয়েছে। সম্প্রতি জাতীয় স্কুল মিটে ও জনজাতি মহোৎসবে বহির্রাজ্যে ১৩টি ইভেন্টে দল পাঠানো হয়েছিল। অনেকেই পুরস্কার পেয়েছে। তিনি বলেন, বালিকা বিবাহ রোধে আমাদের সবাইকে আরও সচেতন হতে হবে।
বিশেষ অতিথির ভাষণে পশ্চিম ত্রিপুরা জিলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাধিপতি হরিদুলাল আচার্য বলেন, আজ নারীরা পুরুষদের সাথে তাল মিলিয়ে প্রত্যেকটি কাজেই এগিয়ে আসছেন। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার জেলাশাসক দেবপ্রিয় বর্ধন, জেলাশিক্ষা আধিকারিক রূপন রায়।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষা দপ্তরের যুগ্ম অধিকর্তা ড. চন্দ্রানী বিশ্বাস। অনুষ্ঠানে ২০২৩ সালে পশ্চিম ত্রিপুরা জেলা থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করেছে এমন ৩২ জন কৃতী ছাত্রীকে শংসাপত্র, পুস্তক ও স্মারক উপহার তুলে দেওয়া হয়।
এছাড়া সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষা দপ্তরের পক্ষ থেকে মিশন বাৎসল্য প্রকল্পে দুঃস্থ ৫ জন ছাত্রীর প্রত্যেককে লেখাপড়া, স্বাস্থ্য ও পুষ্টিকর খাদ্য আহারের জন্য ৪ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়। সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষামন্ত্রী সহ অতিথিগণ তাদের হাতে এই পুরস্কার ও আর্থিক সহায়তা তুলে দেন।