মুখ্যমন্ত্রী সমীপেষু : অভাব, অভিযোগ ও সমস্যার কথা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরলেন জনগণ

স্টাফ রিপোর্টার, আগরতলা, ২৮ জুন।। মুখ্যমন্ত্রী সমীপেষু কর্মসূচিতে প্রত্যাশী মানুষের ভীড় ক্রমশ বাড়ছে। আজও রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত জনসাধারণ একরাশ প্রত্যাশা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহার সাথে সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাৎকারের সময় জনসাধারণ তাদের অভাব, অভিযোগ ও সমস্যার কথা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরেন। তাদের অধিকাংশই চিকিৎসার সাহায্য ও কর্মসংস্থানের আর্জি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সাথে কথা বলেন। মুখ্যমন্ত্রী আলাদা আলাদাভাবে প্রত্যেকের সমস্যার কথা শুনে সমস্যা নিরসনে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সচিব ও আধিকারিকদের নির্দেশ দেন।

আগরতলার বনমালীপুরের বাসিন্দা পেশায় টমটম চালক রাহুল সাহা ও তার স্ত্রী আজ চিকিৎসায় সাহায্যের আর্জি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করেন। সম্প্রতি রাহুল সাহার একটি টিউমারের অপারেশন হয়। রাহুল সাহা মুখ্যমন্ত্রীকে জানান, অপারেশনের খরচ মেটাতে তার আয়ের একমাত্র উৎস টমটমটি বিক্রি করে দিতে বাধ্য হন। রাহুলবাবুর সমস্যার কথা শুনে মুখ্যমন্ত্রী সাথে সাথে তার প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের জন্য উপস্থিত সংশ্লিষ্ট দপ্তরের আধিকারিকদের নির্দেশ দেন।

কৃষ্ণনগরের হারাধন সংঘ এলাকার বাসিন্দা অটো চালক অমিত দে ও তার স্ত্রী তাদের ১৬ বছর বয়সী কন্যাসন্তান অমৃতা দে’র কিডনিজনিত রোগে আক্রান্ত চিকিৎসার জন্য সাহায্যের আর্জি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সাথে কথা বলেন। বহিঃরাজ্যের চিকিৎসকগণ অমৃতার কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট করার পরামর্শ দিয়েছেন। তেমনি কমলপুরের মানিকভান্ডারের বাসিন্দা কৃষিজীবী রহমতউল্লা খান তার ১৫ বছর বয়সী কন্যা সন্তান রোশনী খানের চিকিৎসার সাহায্যের আর্জি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করতে এসেছিলেন। রোশনী হাত-পা খিচুনী ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগে ভুগছে। মুখ্যমন্ত্রী অমৃতা এবং রোশনীর চিকিৎসা সংক্রান্ত কাগজপত্র দেখে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের নির্দেশ দেন।

জিবি ৭৯টিলার বাসিন্দা আশালতা তলাপাত্র আজ তার স্বামীর চিকিৎসার সাহায্যের আর্জি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে এসেছিলেন। আশালতাদেবীর স্বামী দীপঙ্কর সরকারের ব্রেন টিউমারের অপারেশন হয় এবং ক্যান্সার ধরা পড়ে। বর্তমানে জিবি হাসপাতালে তার চিকিৎসা চলছে। আর্থিক অনটনের কারণে তার স্বামীর চিকিৎসার পাশাপাশি তাদের একমাত্র কন্যাসন্তানের পড়াশুনার খরচ চালাতে সমস্যা হচ্ছে জেনে মুখ্যমন্ত্রী তৎক্ষনাৎ ক্যান্সার হাসপাতালের মেডিকেল সুপারকে দীপঙ্করের চিকিৎসা ব্যবস্থা করার জন্য উদ্যোগ নিতে বলেন। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষা দপ্তর থেকে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের জন্য দপ্তরের সচিবকে নির্দেশ দেন। রামনগরের বাসিন্দা সুমন সরকার তার ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত বাবার চিকিৎসার সাহায্যের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর কাছে এলে মুখ্যমন্ত্রী ক্যান্সার হাসপাতালের মেডিকেল সুপারকে সুমনের বাবার চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন।

মুখ্যমন্ত্রী সমীপেষু কর্মসূচিতে আজ আগরতলার সূর্য চৌমুহনীর বাসিন্দা শ্যামলিকা রায় তার ছেলের কর্মসংস্থান এবং আর কে মিশনের বাসিন্দা সাথী দাস কর্মসংস্থানের আর্জি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হন। দু’জনের ক্ষেত্রেই মুখ্যমন্ত্রী প্রয়োজনীয় সহায়তার আশ্বাস দেন। মুখ্যমন্ত্রীর সাথে জনগণের সাক্ষাতের সাপ্তহিক কর্মসূচিতে মুখ্যমন্ত্রীর সচিব ড. প্রদীপ কুমার চক্রবর্তী, শিক্ষা দপ্তরের সচিব শরদিন্দু চৌধুরী, সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষা দপ্তরের সচিব তাপস রায়, আগরতলার অটল বিহারী বাজপেয়ী রিজিওন্যাল ক্যান্সার হাসপাতালের মেডিকেল সুপারিটেনডেন্ট ডা. শিরমনি দেববর্মা, জিবিপি হাসপাতালের ডেপুটি মেডিকেল সুপারিটেনডেন্ট ডা. শঙ্কর চক্রবর্তী সহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য আধিকারিকগণ উপস্থিত ছিলেন।

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *