অনলাইন ডেস্ক, ৩১ অক্টোবর।। গত দেড় মাস ধরে ইরানের চলমান নারীর পেশাকের স্বাধীনতার দাবিতে বিক্ষোভে যোগ দেওয়ায় এবার এক তরুণ শেফ তথা রন্ধন শিল্পীকে পিটিয়ে হত্যা করেছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী। হিজাব ঠিকমত না পরার অভিযোগে গ্রেপ্তারের পর ইরানের পুলিশি হেফাজতে গত ১৬ সেপ্টম্বর মারা যায় মাহসা আমিনি (২২) নামের এক তরুণী।
এর জেরে দেশটিতে হিজাববিরোধী বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনী ইতিমধ্যেই প্রায় ৩০০ জনকে হত্যা করেছে। কয়েকজন ছাত্রীকেও পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এর মধ্যে এবার অভিযোগ উঠলো, দেশটির সেলিব্রেটি শেফ মেহরশাদ শাহিদিকে পিটিয়ে হত্যা করেছে ইরানি বাহিনী।রিপোর্ট, মেহরশাদ শাহিদি দেশটিতে জেমি অলিভার নামেও পরিচিত।
তার ২০তম জন্মদিনের আগে ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ডস (আইআরজিসি) তাকে পিটিয়ে মেরেছে। এর জেরে ইরানের বহু মানুষের মধ্যে নতুন করে ক্ষোভের বন্যা বইছে। গত শনিবার মেহরশাদ শাহিদির দাফন ঘিরে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমেছে বলে খবরে বলা হয়েছে। টেলিগ্রাফ বলছে, ১৯ বছর বয়সী শাহিদিকে বিক্ষোভের সময় গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর আরাক শহরে আইআরজিসি-র কারাগারে তাকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। মাথার খুলিতে আঘাত করে হত্যা করা হয়েছে।
তবে তার পরিবারকে বলতে বাধ্য করা হয়েছে- শাহিদি হার্ট অ্যাটাকে মারা গেছে। এ ছাড়া ইরানের কর্তৃপক্ষ শাহিদির মৃত্যুর দায় নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। ৭নিউজের মতে, দেশটির প্রধান বিচারপতি আবদোলমেহদি মুসাভি বলেছেন, শাহিদির বাহু, পায়ে বা মাথার খুলিতে ফাটল বা মস্তিষ্কে আঘাতের কোনো চিহ্ন নেই।তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শাহিদির মৃত্যুর জন্য ইরানি কর্তৃপক্ষকে দায়ী করা হয়েছে। ইরানি আমেরিকান লেখক নিনা আনসারী বলেন, বুট রেস্টুরেন্টে শাহিদি মেধাবী তরুণ শেফ ছিলেন। তাকে ইরানের নিরাপত্তা বাহিনী নির্মমভাবে হত্যা করেছে।
আগামীকাল তার ২০তম জন্মদিন হতো। আমরা এটি কখনো ভুলবো না, কখনো ক্ষমা করবো না। শাহিদিকে নিজের কাজিন দাবি করা এক ব্যক্তি বলেন, গতকাল ইরানে আমার ১৯ বছর বয়সী কাজিনকে হত্যা করা হয়েছে। কাজের পর শাহিদি বাড়ি ফিরছিল, এরপর তাকে টিয়ারগ্যাস দিয়ে আক্রমণ করা হয়, বাইক থেকে ফেলে দেওয়া হয় এবং অপহরণ করা হয়। পরবর্তীতে শাহিদির পরিবারে ফোন করে লাশ নিয়ে যেতে বলা হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা দাবি করেছে, আমিনির মৃত্যুর পর শুরু হওয়া বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত তিন শতাধিক বিক্ষোভকারী ইরানের নিরাপত্তা বাহিনীর হামলায় নিহত হয়েছেন।