স্টাফ রিপোর্টার, আগরতলা, ২৪ আগস্ট।। কৃষি জমির মাটি পরীক্ষা থেকে শুরু করে কৃষিজাত দ্রব্যের বাজারজাতকরণ পর্যন্ত রাজ্য সরকার কৃষকদের পাশে রয়েছে। ফার্মার্স প্রডিউসার্স অর্গানাইজেশন গঠনের মধ্য দিয়ে কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে।
ত্রিপুরা রাজ্যে ইতিমধ্যেই ২৭টি এ ধরনের সংগঠন রয়েছে। আজ লেম্বুছড়াস্থিত ত্রিপুরা কৃষি মহাবিদ্যালয়ের মিলনায়তনে আয়োজিত মহাবিদ্যালয়ের ১৬তম প্রতিষ্ঠা দিবস অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে একথা বলেন কৃষি ও কৃষক কল্যাণমন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহরায়। এর আগে কৃষিমন্ত্রী সহ অন্যান্য অতিধিগণ কৃষি মহাবিদ্যালয় পরিসরে স্যাটেলাইট বায়োটেকনোলজি ল্যাবরেটরির উদ্বোধন করেন।
আসাম এগ্রিকালচার ইউনিভার্সিটির ডিপার্টমেন্ট অব বায়োটেকনোলজি নর্থ ইস্ট সেন্টার ফর এগ্রিকালচারেল বায়োটেকনোলজি (ডিবিটি-এনইসিএবি) এই ল্যাবরেটরি তৈরিতে সহায়তা করে। এছাড়াও কৃষিমন্ত্রী কৃষিজাত বিভিন্ন সামগ্রীর প্রদর্শনী ঘুরে দেখেন। অনুষ্ঠান উপলক্ষে কৃষিমন্ত্রী সহ অন্যান্য অতিথিগণ কয়েকজন কৃষক এবং মহাবিদ্যালয়ের এই শিক্ষাবর্ষের সেরা ছাত্রী মাধবী দেবনাথকে সংবর্ধনা প্রদান করেন।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে কৃষিমন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহরায় বলেন, রাজ্যে ৪ লক্ষ ৭২ হাজার কৃষক রয়েছেন এবং ২ লক্ষ ৫৫ হাজার হেক্টর জমি কৃষিকাজের আওতায় রয়েছে। রাজ্যের কৃষিজমি খুবই উর্বর। সঠিক বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি ও উন্নত যন্ত্রপাতি ব্যবহারের মাধ্যমে যে কোনও ধরনের ফসল এই রাজ্যে উৎপাদন করা সম্ভব।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নির্দেশে বর্তমান রাজ্য সরকার কৃষকদের আয় বিগুণ করার লক্ষ্যে বিভিন্ন পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে। ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকার এই লক্ষ্যপূরণের কাছাকাছি চলে এসেছে। আগামী বছর থেকে ধান ক্রয়ের ক্ষেত্রে সহায়কমূল্য বৃদ্ধি করে ২০ টাকা ৪০ পয়সা করা হবে।
কিষাণ রেল চালুর মাধ্যমে রাজ্যের উৎপাদিত সামগ্রীকে সহজেই কম খরচে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে। বর্তমানে রাজ্য থেকে আনারস, সুগন্ধী চাল, লেবু, বহিরাজ্য এবং বিদেশে রপ্তানি করা হচ্ছে। রাজ্যে উৎপাদিত কাকরোলকে আগামীদিনে দিল্লির বাজারে পৌঁছে দেওয়ার জন্য উদ্যোগ নেবে কৃষি দপ্তর।
কৃষিমন্ত্রী শ্রীরায় বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে এই মহাবিদ্যালয় আইসিএআর-এর অনুমোদন লাভের পাশাপাশি পাঠ্যক্রমকে জাতীয়মানের করা হয়েছে। তিনি অনুষ্ঠানে জানান, অচিরেই এই কৃষি মহাবিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই লক্ষ্যে গত ২ বছর যাবৎ সংশ্লিষ্ট সকলেই প্রচেষ্টা করে চলেছেন।
অনুষ্ঠান উপলক্ষে অতিথিগণ এদিন মহাবিদ্যালয়ের নিউজ লেটার, স্মরণিকা এবং প্রশিক্ষণ পুস্তিকার আবরণ উন্মোচন করেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখতে গিয়ে মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ ড. তপন কুমার মাইতি জানান, মহাবিদ্যালয়ে শিক্ষা, গবেষণা, পরিবর্ধন এই বিষয়গুলির উপর জোর দেওয়া হয়।
কলেজ থেকে এখন পর্যন্ত ১২টি ব্যাচের ৮০ জনের দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মসংস্থান হয়েছে। তিনি বিভিন্ন বিভাগে পিজি কোর্স চালু, কলেজ পরিসরে ফার্মার্স হোস্টেল, বয়েজ ও গার্লস হোস্টেলের পরিকাঠামোর বৃদ্ধির জন্য অনুরোধ জানান।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তরের সচিব অপূর্ব রায়, সিআরপিএফ-এর ইন্সপেক্টর জেনারেল রবিদীপ সিং শাহী, ডিবিটি-এনইসিএবি-র অধিকর্তা বি কে শর্মা এবং কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তরের অধিকর্তা শরদিন্দু দাস।