রাজ্যের প্রতিটি জেলায় উন্নত পরিকাঠামো গড়ে তোলার প্রয়াস নিতে হবে : প্রতিমন্ত্রী প্রতিমা

স্টাফ রিপোর্টার, আগরতলা, ২০ আগস্ট।। প্রধানমন্ত্রী গতিশক্তি-ন্যাশন্যাল মাস্টার প্ল্যানকে কাজে লাগিয়ে রাজ্যের প্রতিটি জেলায় উন্নত পরিকাঠামো গড়ে তোলার প্রয়াস নিতে হবে। পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার ক্ষেত্রে পানীয়জল, বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিতে হবে।

আজ পশ্চিম ত্রিপুরা জিলা পরিষদের সাধারণ সভায় কেন্দ্রীয় সামাজিক ন্যায় ও ক্ষমতায়ণ প্রতিমন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিক একথা বলেন। সভায় কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শ্রীমতি ভৌমিক জেলার গ্রামীণ এলাকার মানুষকে স্বনির্ভর করে তুলতে কৃষি ও কৃষি সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আরও বেশী করে সহায়তা দেওয়ার উপর গুরত্ব আরোপ করেন।

সভায় কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বলেন, কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলির সুযোগ কাজে লাগিয়ে পশ্চিম ত্রিপুরা জেলাকে একটি মডেল জেলা হিসেবে গড়ে তুলতে জিলা পরিষদকে পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করতে হবে। জেলার প্রান্তিক এলাকার প্রকৃত সুবিধাভোগীদের কাছে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের প্রকল্পের সুযোগ পৌঁছে দিতে হবে।

কৃষির বিকাশ ও কৃষকদের কল্যাণে কেন্দ্রীয় সরকার বহুমুখী পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে। দেশের প্রত্যেক রাজ্যের কৃষকদের প্রশিক্ষনের বব্যস্থাও করা হয়েছে। রাজ্যের ৫০ জন কৃষককে গুজরাটে প্রশিক্ষণের জন্য পাঠানো হবে। কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী জেলায় জৈব চাষ সম্প্রসারণের উপরও গুরত্ব আরোপ করেন। সভায় কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সাংসদ উন্নয়ন তহবিলে পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার ৯টি ব্লকের ৫টি করে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রকে আদর্শ অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার পরামর্শ দেন।

তিনি বলেন, এজনা সাংসদ উন্নয়ন তহবিলে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া হবে। তাছাড়াও সভায় কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সাংসদ উন্নয়ন তহবিলে জেলার প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্রে একটি করে মুক্ত মঞ্চও নির্মাণ করার প্রস্তাব দেন। সভায় শিক্ষা দপ্তরের প্রতিনিধি জানান, পশ্চিম ত্রিপুরা জেলায় এবছর ২৪টি বিদ্যালয়ের নতুন পাকা ভবন নির্মাণের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে।

স্বাস্থ্য দপ্তরের প্রতিনিধি জানান, জেলার ১৭১টি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের মধ্যে ১৩টি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের পরিকাঠামোগত উন্নয়ন করা হয়েছে। সভায় কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তরের প্রতিনিধি জানান, এবছর খারিফ মরশুমে জেলার ১,৪৪৭ হেক্টর জমি শ্রীপদ্ধতিতে ধান চাষের আওতায় আনা হয়েছে।

তাছাড়া জেলার ৭৫৪ হেক্টরে ভূট্টা, ৩৬৪ হেক্টরে ডাল ও ১২৫ হেক্টরে তৈলবীজ চাষে কৃষকদের সহায়তা দেওয়া হয়েছে। উদ্যান ও ভূমি সংরক্ষণ দপ্তরের প্রতিনিধি জানান, জেলার ১০০ হেক্টর জমিতে পাম অয়েলের নার্সারি তৈরির কাজ চলছে। তাছাড়া মুখ্যমন্ত্রী স্বনির্ভর পরিবার যোজনায় এবছর জেলার ২৫,৪০৫টি পরিবারকে সহায়তা দেওয়া হয়েছে।

প্রাণীসম্পদ বিকাশ দপ্তরের প্রতিনিধি জানান, এবছর জেলায় মুখ্যমন্ত্রী স্বনির্ভর পরিবার যোজনায় ৩,২৫৮টি পরিবারকে মোরগপালনে ও ১,০৮৯টি পরিবারকে হাঁসপালনে সহায়তা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। সভায় পানীয়জন ও স্বাস্থ্যবিধান দপ্তরের প্রতিনিধি জানান, জলজীবন মিশনে জেলায় এখন পর্যন্ত ৬৫,৯৬৪টি বাড়িতে পানীয় জলের সুযোগ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। তাছাড়াও ১৫৯টি গভীর নকল্প চালু করা হয়েছে। সভায় বিদ্যুৎ নিগম, জলসম্পদ, পূর্ত, বন, শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরের কর্মসূচি নিয়েও পর্যালোচনা কর হয়।

সভায় সভাপতিত্ব করেন জিলা পরিষদের সভাধিপতি অন্তরা সরকার দেব। উপস্থিত ছিলেন সহকারি সভাধিপতি হরিদুলাল আচার্য, বিধায়ক কৃষ্ণধন দাস, জেলার বিভিন্ন পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারম্যানগণ, জেলাশাসক দেবপ্রিয় বর্ধন, অতিরিক্ত জেলাশাসক অসীম সাহা, জিলা পরিষদের সচিব দেবাশিষ দাস, বিভিন্ন ব্লকের বিডিওগণ।

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *