জাতি জনজাতিদের মিলিত প্রচেষ্টাতেই শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা গড়ে তোলা সম্ভব : মুখ্যমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার, উদয়পুর, ১৪ আগস্ট।। কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার জনজাতিদের আর্থ সামাজিক মান উন্নয়নে আন্তরিক। জনজাতিদের সার্বিক বিকাশে নিরন্তর প্রয়াস জারি রেখেছে সরকার। বর্তমান সরকার প্রকৃত অর্থে জনজাতি অংশের সমাজপতিদের সম্মানিত করেছে। জাতি জনজাতিদের মিলিত প্রচেষ্টাতেই এক ত্রিপুরা, শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা গড়ে তোলা সম্ভব।

আজ কিল্লার দশরথ দেব মেমোরিয়াল ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল মাঠে আজাদি কা অমৃত মহোৎসবের অংশ হিসেবে হর ঘর তিরঙ্গা কর্মসূচিতে জনজাতি সমাজপতিদের সংবর্ধনা প্রদান অনুষ্ঠানে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডাঃ) মানিক সাহা।কিল্লায় মুখ্যমন্ত্রী এদিন হর ঘর তিরঙ্গা কর্মসূচির অংশ হিসেবে কিল্লা বাজার থেকে দশরথ দেব মেমোরিয়াল ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল পর্যন্ত জাতীয় পতাকা নিয়ে।

অনুষ্ঠিত পদযাত্রায় সামিল হন। রাজপথের ধারে অগণিত জনতা এই তিরঙ্গা শোভাযাত্রায় অংশ নেন। পরে স্কুল মাঠে আয়োজিত মূল অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডাঃ) মানিক সাহা। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সমাজের অন্তিম ব্যক্তিদের বিকাশের জন্য যিনি সবচাইতে চিন্তা করেন তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

তার দেখানো পথ ধরে দেশ আজ এগিয়ে চলছে। প্রধানমন্ত্রী আহ্বান রেখেছেন স্বাধীনতার ৭৫ বর্ষপূর্তিকে ঘিরে দেশের জন্য আত্মবলিদান দেওয়া শহীদদের স্মরণে যাতে ১৩ থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রত্যেকের বাড়িতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। এর অন্যতম লক্ষ্য পরবর্তী প্রজন্মকে স্বাধীনতা দিবসের মর্মার্থ সম্পর্কে অবগত করা।

অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জনজাতিদের উন্নয়নে আন্তরিক। রাজ্যের বর্তমান সরকারও প্রধানমন্ত্রীর দিশায় জনজাতিদের উন্নয়নে কাজ করছে। আগরতলা বিমানবন্দরের নাম মহারাজা বীর বিক্রম বিমানবন্দর করা হয়েছে। মহারাজার জন্মদিনে সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। ঐতিহ্যবাহী গড়িয়া পুজোর সময়ে দুদিনের সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।

সেই সঙ্গে এই রাজ্যের জনজাতিদের রিসা আজকের দিনে দেশের সব জায়গায় সমাদৃত হয়েছে। জনজাতিদের মধ্যে তিনজন ব্যক্তিত্বকে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে এডিসির আসন সংখ্যা রয়েছে ২৮টি। আর এই আসন সংখ্যা আগামীতে ৫০টি করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।

যাতে এডিসিতে জনজাতি সম্প্রদায়ের সকল অংশের মানুষের প্রতিনিধিত্ব থাকে। সরকার জনজাতি ছেলেমেয়েদের পড়াশুনার জন্য আরও আবাসিক একলব্য স্কুল তৈরি করছে। এছাড়া জনজাতি ছাত্রছাত্রীদের জন্য তিনটি হোস্টেল নির্মাণ করা হবে। শিলংয়েও জনজাতি পড়ুয়াদের জন্য ১০০ শয্যার হোস্টেল নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এদিন কিল্লাতে হর ঘর তিরঙ্গা কর্মসূচিতে জনজাতি অংশের সমাজপতিদের সম্মানিত করা হয়। এর পাশাপাশি এই কর্মসূচিতে দেশ মাতৃকার জন্য নিজেদের জীবন উৎসর্গ করা এই এলাকার শহীদ বীরযোদ্ধা জওয়ানদের পরিবারগুলিকে সম্মানিত করা হয়েছে। শহীদদের মধ্যে টেনিসন জমাতিয়া, মঙ্গরাম দেববর্মা, রবি কুমার দেববর্মা এবং চিত্তরঞ্জন দেববর্মার পরিবারকে সম্মানিত করা হয়।

এছাড়া জনজাতি সমাজপতিদের মধ্যে সংবর্ধিত করা হয় বিপ্লব কুমার জমাতিয়া, মঙ্গলপদ কলই, খুদিন ভক্ত মলসম, বীরধন শ্যাম কাইপেং, সুনীল মুড়াসিং, খাবা রিয়াং, জয়মানিক রুপিনী, প্রভারাই নোয়াতিয়া, বীরেন্দ্র ত্রিপুরা, লরেন্স উচই, টিংকুমা দার্লং, দেবযান চাকমা, পূর্ণচন্দ্র দেববর্মা ও জে বিকাশ চোৱাইকে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। জনজাতি কল্যাণ মন্ত্রী রামপদ জমাতিয়া, সাংসদ রেবতি ত্রিপুরা, এডিসির সদস্য সঞ্জীব রিয়াং, পদ্মলোচন ত্রিপুরা, জনজাতি কল্যাণ দপ্তরের অধিকর্তা ডঃ বিশাল কুমার, গোমতী জেলার জেলাশাসক রাভেল হেমেন্দ্র কুমার প্রমুখ।

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *