স্টাফ রিপোর্টার, বিলোনীয়া, ৫ আগস্ট।। বিষধর সাপের দংশনে ১১বছর বয়সী এক নাবালকের মৃত্যু। পিতার কাঁধে মৃত ইমনের নিথর দেহ। হাসপাতাল চত্বরে শোকের ছায়া।বিলোনিয়া মহাকুমার বড় পাথরি ওয়াংছড়া এলাকার ঘটনাটাটি সত্যি কেমন যেন বেমানান।
সারা শরীরের কোন জায়গাতে সর্প দংশনের নেই কোন ক্ষত চিহ্ন। তবুও প্রাণ চলে গেল রুপম ত্রিপুরার ১১ বছর বয়সী নাবালক পুত্র ইমনের। জানা যায় আনুমানিক রাত তিনটে, গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন ইমন হঠাৎ করে কোন কিছুর কামড় অনুভব করতে পেরে সজোরে চিৎকার করে লাফ দিয়ে উঠে বিছানায়।
চিৎকার দিয়ে মা-বাবাকে ডাকতে শুরু করাতে- তড়িঘড়ি আলো জ্বালিয়ে দেখতে পাওয়া যায় ইমনের হাতে ধরা একটি কালো রঙের বিষধর সাপ। গালের এক পাশের একটি জায়গাতে সর্প দংশনের কথাও বলে ইমন। কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে নিজ এলাকার ওঝা ডেকে ঝাড়ফুঁক করা হয় ইমনকে। অবশেষে সকাল বেলা ইমনের শারীরিক অবস্থা বেগতিক দেখে নিয়ে আসা হয় বড় পাথরি সোনাপুর প্রাথমিক হাসপাতালে।
শরীরে কোনপ্রকার ক্ষত না থাকলেও- সর্প দংশনের কথা শুনে ইমনের শরীরে দুটো ইঞ্জেকশন দেওয়া হয় বলে জানান ইমনের পিতা রুপম ত্রিপুরা। এরপর নিয়ে আসা হয় বিলোনীয়া মহকুমা হাসপাতালে। তড়িঘড়ি চিকিৎসা পরিষেবা দিতে গিয়েও বাঁচানো যায়নি ইমানকে।
যাই হোক, নানান প্রচেষ্টার পর ইমনের মরদেহ পিতা রূপমের কাঁধে নিয়ে বাড়িতে ফিরে যেতে হয় মাতাপিতা সহ বাড়ির লোকজনদের। পিতার কাঁধে নাবালক পুত্রের নিথর দেহ এই দৃশ্য দেখে হাসপাতাল চত্বরে শোকের ছায়া নেমে আসে।
অবশেষে একটি প্রশ্ন বারবার ঘোরাফেরা করছে হাসপাতাল চত্বরে। ইমনের শরীরে কোনপ্রকার ক্ষতচিহ্ন না থাকা সত্ত্বেও শুধুমাত্র সর্প দংশনের গল্প শুনেই কি হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক- বিষক্রিয়ার ইনজেকশন দিল ইমনকে?
তাছাড়া বিলোনীয়া হাসপাতাল থেকে সল্প সময়ের ব্যবধানে ছোট্ট ইমনের মরদেহ তাড়াতাড়ি বিদায় করার পেছনে সংকটের বেড়াজাল থেকে চিকিৎসককে বাঁচানোর জন্য- অন্য কোন গল্প লুকিয়ে নেই তো?
তবে যাই হোক- পরিশেষে এটা বাস্তবিক সত্য ছোট্ট নাবালক ইমন কিন্তু চলে গেছে না ফেরার দেশেই। আজ ছিল ইমনের স্কুলের পরীক্ষা। দেয়া হলোনা আজ তার পরীক্ষা। ইমন রেখে গেল শুধু অনেকগুলি প্রশ্ন।