স্টাফ রিপোর্টার, আগরতলা, ৪ আগস্ট।। রাজ্যে মিজোরাম থেকে আগত ব্রু (রিয়াং) শরনার্থীদের স্থায়ী পুনর্বাসনের প্রক্রিয়ার কাজ এগিয়ে চলেছে। ৬,৯৫৯টি পরিবারের ৩৭, ১৩৬ জনকে পুনর্বাসনের লক্ষ্যে ১২টি স্থান চিহ্নিত করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৩,২৩২টি পরিবারকে মোট ৮টি জায়গায় পুনর্বাসন দেওয়া হয়েছে।
আজ সচিবালয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনে রাজস্ব দপ্তরের প্রধান সচিব পুনিত আগরওয়াল ব্রু শরনার্থী পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরে একথা জানান। সাংবাদিক সম্মেলনে প্রধান সচিব জানান, এখন পর্যন্ত ২,৪৮৬টি পরিবারের এলাকাভিত্তিক পুনর্বাসনের জন্য নামের তালিকা ব্রু শরনার্থী নেতৃবৃন্দের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।
রাজ্যের ৮টি এলাকায় জোরকদমে পুনর্বাসনের প্রক্রিয়া চলছে। ইতিমধ্যেই পুনর্বাসন এলাকায় জঙ্গল পরিষ্কার, মাটি সমতলকরণ, ইটের রাস্তা নির্মাণ, পানীয়জল ও বিদ্যুতের সুযোগ সৃষ্টি, সৌর বিদ্যুতের ব্যবস্থা, শৌচাগার নির্মাণ, স্কুল নির্মাণ, হেলথ সাব-সেন্টার গড়ে তোলা, বসত ঘর নির্মাণ, কমন শেলটার হাউস নির্মাণ ইত্যাদি কাজ চলছে।
যে ১২টি এলাকায় সমস্ত ব্লু শরনার্থী পরিবারকে স্থায়ী পুনর্বাসনের জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে সেগুলি হল ধলাই জেলার বোঙ্গাফা পাড়া, হাদুকলাউ পাড়া, উত্তর জেলার কাসকু, ওয়াইবুক ছড়া, রাণীপাড়া, পশ্চিম কালাবাড়ি, ভান্ডারিমা পুস্পরাম পাড়া, হামসাপাড়া, থাকচাং, উল্টাছড়া, গাছিরাম পাড়া, গোমতী জেলার শিলাছড়া এবং দক্ষিণ জেলার কালা লাউগাঙ।
সাংবাদিক সম্মেলনে বিপর্যয় মোকাবিলা সংক্রান্ত প্রস্তুতিমূলক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোকপাত করেন প্রধান সচিব পুনিত আগরওয়াল। তিনি বলেন, বিপর্যয় মোকাবিলায় প্রস্তুতিতে মুখ্যমন্ত্রীর পৌরহিত্যে স্টেট ডিজাষ্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি কাজ করছে। এই সংক্রান্ত নির্দেশনা, নিয়ন্ত্রণ, সমন্বয় সাধন, ব্যবস্থাপনার জন্য ইমারজেন্সী অপারেশন সেন্টার ২৪ ঘন্টা কাজ করছে।
রাজ্য সরকার এনডিআরএফের ধাঁচে চার কোম্পানী স্টেট ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স গঠন করেছে। শ্রী আগরওয়াল জানান, এছাড়াও সমস্ত জেলায় সিভিল ডিফেন্সের স্বেচ্ছাসেবকরা কাজ করছেন। বিভিন্ন পর্যায়ে ১,২৫০ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। ‘আপদা মিত্র’ স্বেচ্ছাসেবক প্রকল্প রাজ্যে রূপায়িত হচ্ছে। কেন্দ্রীয় এই প্রকল্পে রাজ্যের ৭ জেলায় ৮০০ স্বেচ্ছাসেবককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
এখন পর্যন্ত ২৫০ জন আপদা মিত্র স্বেচ্ছাসেবককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। নিয়মিত বিপর্যয় মোকাবিলায় প্রত্যেক জেলাকে রাজস্ব দপ্তরের পক্ষ থেকে কমিউনিটি ভলান্টিয়ার নিযুক্তির নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে। প্রতিদিন ২০০ টাকা হারে তারা সাম্মানিক ভাতা পাবেন। বিকল্প যোগাযোগ ব্যবস্থার জন্য হ্যাম রেডিও চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শীঘ্রই আগরতলায় প্রথম হ্যাম স্টেশনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে।
হ্যাম রেডিও কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ১৫০০ অফিসিয়াল এবং স্বেচ্ছাসেবকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, প্রতি মাসের তৃতীয় শনিবার প্রতিটি বিদ্যালয়ে ভূমিকম্পের বিপর্যয় থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য মহড়া অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তর বিপর্যয় সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে মহড়া, প্রশিক্ষণ, আলোচনা ইত্যাদি কার্যক্রম জারি রেখেছে। সাংবাদিক সম্মেলনে রাজস্ব দপ্তরের অতিরিক্ত সচিব অনিন্দ্য ভট্টাচার্য, প্রদীপ আচার্য এবং স্টেট নোডাল অফিসার শরৎ দাস প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।