মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত অধিকাংশই সমকামী পুরুষ

অনলাইন ডেস্ক, ২ জুন।। বিশ্বেজুড়ে গত প্রায় এক মাসে যত মানুষ মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের অধিকাংশই সমকামী পুরুষ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মহাপরিচালক তেদ্রোস আধানম গ্রেব্রিয়েসুস বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি আরও জানান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হাতে থাকা তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে বিশ্বের ৩০টি দেশে ছড়িয়েছে বিরল ভাইরসজনিত অসুখ মাঙ্কিপক্স। আর এ রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ইতিমধ্যেই ৫৫০ জন ছাড়িয়ে গেছে।

সুইজারল্যান্ডের রাজধানী জেনেভায় ডব্লিউএইচও কার্যালয়ে আয়োজিত ওই সংবাদ সম্মেলনে গেব্রিয়েসুস বলেন, ‘এ পর্যন্ত যত জন মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের অধিকাংশই সমকামী পুরুষ। আমাদের কাছে থাকা তথ্য বলছে, আক্রান্ত এই রোগীরা বিভিন্ন যৌন স্বাস্থ্য ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। সমকামীদের বিভিন্ন কমিউনিটিতে এ বিষয়ে জনসচেতনতামূলক নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলেও আমরা জানতে পেরেছি’।

মাঙ্কিপক্স একটি ভাইরাসজনিত অসুখ। স্মলপক্স ভাইরাস শ্রেণির একটি ভাইরাস এ রোগের জন্য দায়ী। ভাইরাসটির দুটি রূপান্তরিত ধরন রয়েছে- মধ্য আফ্রিকান ও পশ্চিম আফ্রিকান।

এটি একটি বিরল ও স্বল্প পরিচিত রোগ। বিশেষজ্ঞদের মতে পশ্চিম ও মধ্য আফ্রিকার উষ্ণ ও আদ্র বনাঞ্চলের বানররা ছিল এ রোগের প্রথম শিকার। তার পর একসময় মানবদেহেও সংক্রমিত হওয়া শুরু করে মাঙ্কিপক্স।

রোগটির বিভিন্ন লক্ষণের মধ্যে রয়েছে জ্বর, মাথাব্যথা, ঘেমে যাওয়া, পিঠে ব্যথা, মাংসপেশির টান ও অবসাদ। প্রথম পর্যায়ে রোগীর জ্বর আসে, পাশাপাশি শরীরে দেখা দেয় ফোস্কা ও অধিকাংশ ঘটনায় শুরুতে মুখে ফুসকুড়ি ওঠে। পরে শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়ে; বিশেষ করে হাত ও পায়ের তালুতে।

১৯৭০ সালের পর থেকে আফ্রিকার ১১ দেশে মাঙ্কিপক্স সংক্রমণের খবর পাওয়া যায়। ২০১৭ সালের পর নাইজেরিয়ায় চলতি সবচেয়ে বেশি এ রোগের প্রকোপ দেখা গেছে।

চলতি বছরে গত ৭ মে প্রথম একজন ইউরোপীয়ের দেহে মাঙ্কিপক্স শনাক্ত হয়। নাইজেরিয়া থেকে ওই ব্যক্তি ইংল্যান্ডে ফিরে এসেছিলেন।

তবে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমান শনাক্তদের বেশিরভাগ আফ্রিকা ভ্রমণের সঙ্গে সম্পর্কিত নন। যে কারণে রোগের প্রাদুর্ভাবের বিষয়টি অস্পষ্ট থেকে যাচ্ছে। স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ বলছে, সামাজিক সংস্পর্শ থেকে এটা ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এদিকে, মাঙ্কিপক্স কেবল পুরুষ সমকামীদেরই আক্রান্ত করে করে কিনা- এই গুঞ্জন চলছিল এ মাসে রোগটির ছড়িয়ে পড়তে থাকার শুরু থেকেই। কারণ, শুরু থেকেই দেশে দেশে সমকামী পুরুষরা এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছিলেন।

তবে বুধবারের সম্মেলনে ডব্লিউএইচও মহাপরিচালক এ সম্পর্কে বলেন, ‘মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত রোগীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ শারীরিক সম্পর্কে জড়ালে যে কারোরই এ রোগ আক্রান্তের সম্ভাবনা রয়েছে’।

 

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *