পাঁচ দশকের অপেক্ষার পর মিতালী এক্সপ্রেসের চাকা ঘুরবে

অনলাইন ডেস্ক, ১ জুন।। টানা পাঁচ দশকের অপেক্ষার পর ফের স্মৃতির রেলপথ ধরে মিতালী এক্সপ্রেসের চাকা গড়াচ্ছে। দার্জিলিং জেলার নিউ জলপাইগুড়ি (NJP) থেকে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা পর্যন্ত আন্তর্জাতিক এই ট্রেন সফর ঘিরে বাণিজ্যিক-কূটনৈতিক তৎপরতা তুঙ্গে। কারণ মিতালী এক্সপ্রেসের মাধ্যমে নেপাল, ভুটান হয়ে উত্তরবঙ্গের সঙ্গে বাংলাদেশের ট্রেন যোগাযোগ বাণিজ্যিক দিকটিও খুলে দিচ্ছে।

ভারতের রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব ও বাংলাদেশের রেলপথ মন্ত্রী অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম সুজন “মিতালি এক্সপ্রেস” ট্রেনের যাত্রা উদ্বোধন করবেন।

পর্যটন শিল্পের নিরিখে পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার, দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার ও কালিম্পং জেলাগুলি যেমন আকর্ষণীয়, তেমনই সিকিম, অসম বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। মিতালী এক্সপ্রেসে চড়ে বাংলাদেশের পর্যটকরা সরাসরি এনজেপি পৌঁছে এই অঞ্চলগুলিতে যেতে পারবেন। আর বাংলাদেশের দিকে রংপুর ও রাজশাহী ভিত্তিক ঐতিহাসিক পুরাতাত্ত্বিক অঞ্চলগুলি ভারতীয় পর্যটকদের জন্য আরও নিকটে চলে আসছে।

কূটনৈতিক দিক থেকে মিতালী এক্সপ্রেস ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে নতুন যোগসূত্র। পশ্চিমবঙ্গ লাগোয়া নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে এই রেলপথ ধরে বাণিজ্যিক আদানপ্রদান হবে ভবিষ্যতে। দক্ষিণ এশিয়া ভিত্তিক ভারতের সঙ্গে ত্রিদেশীয় সম্পর্ক আরও মজবুত হতে চলেছে।

১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের কারণে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে বিভিন্ন রেলপথ বন্ধ হয়েছিল। পাঁচ দশক পর তেমনই একটি রেলপথ পুনরায় জীবন পেল। সম্প্রসারিত এই রেলপথ ধরে মিতালী এক্সপ্রেস বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত করবে পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং জেলাকে।

২০২১ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে যৌথভাবে নিউ জলপাইগুড়ি-ঢাকা মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেন পরিষেবার সূচনা করেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর উদ্‌যাপন করতে প্রধানমন্ত্রী মোদী ঢাকায় এসেছিলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে এই ট্রেন পরিষেবার উদ্বোধন করা হয়।

বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক (পশ্চিম) অসীম কুমার তালুকদার বলেছেন, দুই দেশের বাসিন্দারা দীর্ঘ অপেক্ষার মিতালী এক্সপ্রেসের ছুটে যাওয়া দেখতে মুখিয়ে আছেন।

মিতালী এক্সপ্রেস বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বন্ধুত্বের প্রতীক হিসেবে ২০২১ সালের ২৭ শে মার্চ প্রতীকী উদ্বোধন হয়। বাংলাদেশের ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট রেলওয়ে স্টেশন এবং ভারতের নিউ জলপাইগুড়ি রেল স্টেশন পর্যন্ত ৫৯৫ কিলোমিটার পথের সিংহভাগ বাংলাদেশে পড়ছে।

বাংলাদেশ রেলওয়ে জানাচ্ছে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট, পার্বতীপুর জংশন, চিলাহাটি হয়ে আন্তর্জাতিক সীমান্ত পেরিয়ে মিতালী এক্সপ্রেস ঢুকবে পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলার হলদিবাড়ি স্টেশনে। সেখান থেকে নিউ জলপাইগুড়ি যাবে।

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *