অনলাইন ডেস্ক,৯ এপ্রিল।। রাজস্থানের কারৌলির সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার পর আজমির প্রশাসন গোটা জেলায় ১৪৪ ধারা বলবৎ করেছে। আজমিরের শহর এবং গ্রামীণ এলাকায় ধর্মীয় স্থলে লাউড স্পিকারের ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পাশাপাশি, কোনও ভবনে কোনও ধরনের পতাকা কিংবা ধর্মীয় প্রতীক ব্যবহারের উপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে আজমির জেলা প্রশাসন। আসন্ন উরুশ উৎসবের প্রেক্ষিতে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে ১৪৪ ধারা বলবৎ করা হয়েছে বলে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে।
৭ এপ্রিল আজমিরের জেলা কালেক্টর অংশদীপ একটি সরকারি নির্দেশনামায় জানিয়েছেন, আজমিরে ধর্মীয় উৎসবের সময় কিছু দুষ্কৃতী আজমির জেলায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করতে পারে যার ফলে আইন-শৃঙ্খলার সমস্যা সৃষ্টির আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। সরকারি ভবন, সরকারি সম্পত্তি, ইলেকট্রিক এবং টেলিফোন খুঁটিতে ধর্মীয় প্রতীক সম্বলিত পতাকা টাঙিয়ে এই দুষ্কৃতীরা পরিস্থিতি উত্তপ্ত করতে পারে। এই দুষ্কৃতীরা অন্যদের ব্যক্তিগত বাসভবনে এই ধরনের অপকর্ম করতে পারে যাতে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এই ধরনের পরিস্থিতির যাতে উদ্ভব না হয়, তাই প্রশাসন গোটা জেলায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি এবং শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে। প্রসঙ্গত, রাজস্থানের করৌলিতে এক ধর্মীয় মিছিলের উপর পাথর ছোঁড়াকে উপলক্ষ্য করে সেখানে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে। তারপরেই রাজস্থানের মিশ্র এলাকায় চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করে রাজ্য সরকার।
আজমিরের জেলা কালেক্টর তাঁর নির্দেশিকায় বলেছেন, ১৪৪ ধারা বলবৎ করার পাশাপাশি সরকারি বা বেসরকারি ভবনে অনুমতি ছাড়া কোনও পতাকা বা ধর্মীয় প্রতীক ব্যবহার করা যাবে না। এই নিষেধাজ্ঞাগুলি ২০২২ সালের ৭ এপ্রিল বেলা ১০টা থেকে এক মাসের জন্য বলবৎ থাকবে। নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন যদি কোনও ব্যক্তি বা গোষ্ঠী সরকারি নির্দেশ অমান্য করে তার বা তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রশাসন সাধারণ জায়গা এবং ধর্মস্থানগুলিতে মাইকের ব্যবহারও নিষিদ্ধ করে দিয়েছে। কোনও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে বা সামাজিক অনুষ্ঠানে ডিজে বাজানো যাবে না। কেউ যদি মাইক ব্যবহার করতে চায় তাহলে তাকে এসডিএমের লিখিত অনুমতি নিতে হবে। তবে অনুমতি সাপেক্ষে মাইক বাজানো যাবে বেলা ১০টা থেকে বিকেল ৬টা পর্যন্ত।
উল্লেখ্য, আজমিরে মইনুদ্দিন চিশতির দরগাহতে বহু মানুষ সমবেত হন। তাদের মধ্যে অমুসলিমও থাকেন। আজমির দরগাহকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য নজির হিসেবে উত্থাপন করা হয়। এখন সেখানেই সাম্প্রদায়িক উত্তেজনার আশঙ্কা করছে রাজস্থান প্রশাসন। কারৌলির ঘটনায় রাজস্থান পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। পুলিশ সক্রিয় হলে মুসলিম মহল্লায় ৩৫টি বাড়ি জ্বালানোর ঘটনা এড়ানো যেত বলে মনে করছেন রাজস্থানের কংগ্রেস নেতারাও। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী গেহলট পুলিশের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিতে চাননি। এখন আজমির নিয়ে পরিস্থিতি আবার উত্তপ্ত না হয়, সেজন্য আগেভাগে ব্যবস্থা নিতে চাইলেন।