কিয়েভ ও চেরনিহিভ থেকে পিছু হটেছে রুশ সেনারা

অনলাইন ডেস্ক,৭এপ্রিল।। ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ ও এর উত্তর দিকের শহর চেরনিহিভ থেকে পিছু হটেছে রুশ সেনারা।

মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের কর্মকর্তারা বলেছেন, ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ ও কিয়েভের উত্তর দিকের শহর চেরনিহিভ থেকে রাশিয়ার সেনা প্রত্যাহার এখন সম্পূর্ণ হয়েছে।

পেন্টাগনের একজন কর্মকর্তা বুধবার সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘বেলারুশ ও রাশিয়ায় পুনঃসংহত ও পুনর্গঠনের জন্য কিয়েভ এবং চেরনিহিভের কাছের এলাকা থেকে রাশিয়ান বাহিনী তাদের সেনা প্রত্যাহার সম্পন্ন করেছে’।

পেন্টাগনের মুখপাত্র জন কিরবি পরে আরও বলেন, ‘আমরা কিয়েভ বা চেরনিহিভের আশেপাশে রাশিয়ান সেনাদের কোনো উপস্থিতি দেখতে পাচ্ছি না’।

কিরবি বলেন, ‘রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ‘তার কৌশলগত লক্ষ্যগুলোর একটিও অর্জন করতে পারেননি’। তিনি শুধুমাত্র একটি ছোট জনসংখ্যার কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণ নিতে পেরেছেন…. খারকিভও দখল করতে পারেননি’।

সম্প্রতি রাশিয়ান সেনাবাহিনী তাদের মনোযোগ ইউক্রেনের পূর্ব ডনবাস অঞ্চলে কেন্দ্রীভূত করার ঘোষণা দেওয়ার কয়েকদিন পর কিয়েভ ও চেরনিহিভ থেকে সেনা প্রত্যাহার সম্পন্ন হল।

তবে মার্কিন সেনা সদর দপ্তর পেন্টাগনের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন যে, রাশিয়ান সৈন্যরা ভবিষ্যতে কিয়েভে ফিরে আসতে পারে, তবে তা এখনও স্পষ্ট নয়।

ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অফ ওয়ার থিঙ্ক-ট্যাঙ্কের মতে, কিয়েভের চারপাশ থেকে পশ্চাদপসরণ করা রাশিয়ান সেনা ইউনিটগুলোর ‘শিগগিরই যুদ্ধের কার্যকারিতা ফিরে পাওয়ার’ সম্ভাবনা কম।

ইউক্রেনে পাঠানো ১৩০টি রাশিয়ান ব্যাটালিয়নের মধ্যে ৮০টিরও বেশি ব্যাটালিয়ন এখনও দেশটিতে রয়ে গেছে।

মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তার বরাত দিয়ে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস জানিয়েছে, রাশিয়া কমপক্ষে ২৪ হাজার সেনাকে সরিয়ে নিয়েছে।

তবে ফোর্বস দাবি করছে, রাশিয়া অন্তত ৪০ হাজার সেনাকে বেলারুশ ও রাশিয়ায় ফিরিয়ে নিয়েছে।

গত ২৯ মার্চ রাশিয়া ঘোষণা দিয়েছিল, এখন থেকে ইউক্রেনে থাকা রুশ সেনাদের প্রধান লক্ষ্য হবে ডনবাস তথা লুহানস্ক ও দোনেৎস্ককে পূরোপুরি স্বাধীন করা। ওই ঘোষণার পরই ধারণা করা হয়েছিল রাশিয়া হয়তো কিয়েভ দখলের আশা ছেড়ে দিয়েছে।

লুহানস্ক ও দোনেৎস্ককে স্বাধীনতার স্বীকৃতি দিয়ে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরু করার সঙ্গে সঙ্গেই রাশিয়ান বাহিনী বিভিন্ন দিক থেকে দেশটির রাজধানী কিয়েভের কাছে আসতে শুরু করে। তখন পশ্চিমা দেশগুলো বলেছিল ইউক্রেনের সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্যই রাজধানী কিয়েভ দখল করতে চায় রাশিয়া। কিন্তু আক্রমণকারী রশ সৈন্যরা কিয়েভের শহরতলিতে স্থবির হয়ে পড়ে এবং পুরো রাজধানী ঘেরাও করতে ব্যর্থ হয়। কারণ ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী তীব্রভাবে পাল্টা লড়াই করেছিল এবং রুশ সেনারা অস্ত্র ও খাদ্য সরবরাহের ঘাটতিতে পড়েছিল।

রাশিয়ান সৈন্যদের একটি দল গত মাসে কিয়েভ থেকে প্রায় ৮০ মাইল উত্তরের প্রায় ৩ লাখ বাসিন্দার শহর চেরনিহিভকেও ঘিরে ফেলে। কিন্তু তারা আর রাজধানী শহরের দিকে যেতে পারেনি। এই ধীরগতির অগ্রগতির ফলে রাশিয়া গত মাসের শেষ দিকে শুধু পূর্ব ইউক্রেনের ‘মুক্তির’ উপর ফোকাস করার ঘোষণা দিয়ে কিয়েভ দখলের উচ্চাকাঙ্ক্ষা ত্যাগ করে।

পূর্ব ইউক্রেনের কিছু অংশ গত প্রায় ৮ বছর ধরে রাশিয়াপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। লুহানস্কের প্রায় ৯০% আর দোনেৎস্কের প্রায় অর্ধেক এখন রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *