দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কায় জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার

অনলাইন ডেস্ক,৬ এপ্রিল।। চরম অর্থনৈতিক সংকটে পড়া দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কায় জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে। মঙ্গলবার গভীর রাতে এক বিবৃতিতে দেশটির প্রেসিডেন্ট এমনটি জানান।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়ে বলা হয়েছে, ওই দিনই সরকারি জোট ছেড়ে গেছেন দেশটির অন্তত ৪১ জন আইনপ্রণেতা। এ অবস্থায় প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের সরকার সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছে।

এর আগে গত ১ এপ্রিল তীব্র অর্থনৈতিক সংকটের জের ধরে সহিংস বিক্ষোভের পর শ্রীলঙ্কায় জরুরি অবস্থা জারি করা হয়।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়, গোতাবায়া রাজাপক্ষে জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার দেয়া বিবৃতিতে জানান, ৫ এপ্রিল মধ্যরাত থেকে এই ঘোষণা কার্যকর হবে।

তিনি বলেন, আমি, গোতাবায়া রাজাপক্ষে, সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট, এতদ্বারা গেজেটটি প্রত্যাহার করে নিচ্ছি যা ০৫ এপ্রিল ২০২২ মধ্যরাত থেকে কার্যকর হবে।

অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে গণঅসন্তোষে দেখা দেওয়া বিক্ষোভ ও সহিংসতার পর প্রেসিডেন্ট ১ এপ্রিল দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করেছিলেন। এর আগের দিন রাতে গোতাবায়ার ব্যক্তিগত বাসভবনের সামনে কয়েক হাজার লোক জড়ো হয়ে প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ দাবি করে বিক্ষোভ করে। এ সময় পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়।

কিন্তু জরুরি অবস্থা ও কারফিউ জারি সত্ত্বেও প্রতিবাদ অব্যাহত থাকে। ক্ষমতাসীন দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের বাড়ি ঘেরাও করে ক্ষুব্ধ প্রতিবাদকারীরা অর্থনৈতিক সংকটের সমাধান দাবি করতে থাকে।

মঙ্গলবার পার্লামেন্ট অধিবেশন চলাকালে ৪১ জন আইনপ্রণেতা ক্ষমতাসীন জোট থেকে বেরিয়ে গিয়ে স্বতন্ত্র সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালনের ঘোষণা দেন। এতে দেশটির ২২৫ সদস্যের পার্লামেন্টে প্রেসিডেন্ট গোটাবায়ার ক্ষমতাসীন জোট সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারায়।

মঙ্গলবারও প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের সামনে কয়েক ডজন প্রতিবাদকারী জড়ো হয়ে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।

এনডিটিভি জানিয়েছে, রাজধানী কলম্বোয় পার্লামেন্টের কাছে নম্বরবিহীন মোটরসাইকেলে করে মুখোশ পরা অ্যাসল্ট রাইফেলধারী একদল সেনাকে সরকারবিরোধী একটি প্রতিবাদ মিছিলের সঙ্গে দেখা গেছে। স্পেশাল ফোর্সের এই সেনাদের থামায় পুলিশ। এতে ওই সশস্ত্র সেনাদের সঙ্গে পুলিশ কর্মকর্তাদের সংঘর্ষের উপক্রম হয়।

এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে এবং দ্রুত ঘটনা তদন্ত করে দেখার জন্য শ্রীলঙ্কার প্রতিরক্ষা প্রধান শাভেন্দ্র সিলভার প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

বৈদেশিক মুদ্রার সংকটে পড়া শ্রীলঙ্কা তাদের নরওয়ে ও ইরাক দূতাবাস এবং অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে নিজেদের কনস্যুলেট সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

 

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *