ক্রমেই জাঁকিয়ে বসছে বিদ্বেষ ও অসহিষ্ণুতা

অনলাইন ডেস্ক, ২৯ মার্চ।। গোটা দেশজুড়ে যেন ক্রমেই জাঁকিয়ে বসছে বিদ্বেষ ও অসহিষ্ণুতা। এবার স্রেফ মুসলিম ধর্মাবলম্বী হওয়াতে কেরলের মন্দিরে ভারতনাট্যমের অনুমতি দেওয়া হলনা মনসিয়া ভিপিকে।

দেশে অসহিষ্ণুতা চরম পর্যায়ে পৌঁছে গেছে– তার পরিচয় আরও একবার দিল এই ঘটনা। হিন্দু না হওয়ায় ধ্রুপদি নৃত্য ভারতনাট্যম নাচতে বাধা দেওয়া হয় বিশিষ্ট নৃত্যশিল্পী মানসিয়া ভি পি-কে। তিনি অভিযোগ করেছেন– কেরলের ত্রিশুর জেলার ইরিঞ্জালকুডার কুডালমাণিক্যম মন্দিরে তাকে অ-হিন্দু হওয়ার কারণে মন্দির প্রাঙ্গণে একটি নির্ধারিত নৃত্যের অনুষ্ঠান করা থেকে বাধা দেওয়া হয়েছে। এই মন্দিরটি রাজ্য সরকার নিয়ন্ত্রিত দেবস্বম বোর্ডের অধীনস্থ।

মানসিয়া ভারতনাট্যমের একজন পিএইচডি রিসার্চ স্কলার। এর আগে মুসলিম হিসাবে জন্মগ্রহণ ও বেড়ে ওঠা সত্ত্বেও শাস্ত্রীয় নৃত্যের শিল্পী হওয়ার কারণে কয়েকজন মুসলিমের ক্রোধ ও বয়কটের মুখোমুখি হয়েছিলেন তিনি। এবার হিদু সমাজের পক্ষ থেকেই তাকে নাচতে বাধা দেওয়া হল।

তাঁর ফেসবুক পোস্টে মানসিয়া লিখেছেন যে– তাঁর নৃত্যের অনুষ্ঠানটি ২১ এপ্রিল মন্দির প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। তাঁর ভাষায়– মন্দিরের একজন কর্মকর্তা আমাকে জানান যে আমি অ-হিন্দু হওয়ায় মন্দিরে অনুষ্ঠান করতে পারব না। আপনি একজন ভালো নৃত্যশিল্পী কি না– তা বিবেচনা না করে ধর্মের ভিত্তিতে এখানে বিচার করা হল।

আমি বিয়ের পরে হিন্দু হয়েছি কি না– তা নিয়েও প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছি। (তিনি সংগীতশিল্পী শ্যাম কল্যাণকে বিয়ে করেছেন)। আমার কোনও ধর্ম নেই। এখন আমি কোথায় যাব? তিনি আরও বলেন যে ধর্মের উপর ভিত্তি করে কোনও প্রোগ্রাম থেকে এই বাদ দেওয়ার অভিজ্ঞতা এই প্রথম নয়। কারণ– কয়েক বছর আগে তাকে অহিন্দু হওয়ার কারণে গুরুভায়ুর শ্রী কৃষ্ণ মন্দিরে রেদ অনুষ্ঠান করতে নিষেধ করা হয়েছিল। ক্ষোভের সঙ্গে তিনি বলেন– শিল্পীদেরকেও ধর্মবর্ণের ভেদাভেদের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এক ধর্মের জন্য কিছু নিষিদ্ধ হলে তা অন্য ধর্মের একচেটিয়া অধিকারে পরিণত হয়। এই অভিজ্ঞতা আমার কাছে নতুন নয়। আমি এসব এখানে বলছি শুধুমাত্র এটা মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য যে আমাদের ধর্মনিরপেক্ষ কেরলে কিছুই পরিবর্তন হয়নি।

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *