স্টাফ রিপোর্টার, আগরতলা, ৯ মার্চ।। প্রথাগত শিক্ষা গ্রহণের পাশাপাশি সমাজের পারিপার্শ্বিক ঘটনাবলী সম্পর্কে ছাত্রছাত্রীদের সম্যক ধারণা থাকতে হবে। ছাত্রছাত্রীরা নিজেদের প্রতিভাকে বিকশিত করতে পারলে সাফল্য লাভের ক্ষেত্রে গতি আসে এবং সাফল্যও আসে। আজ এজিএমসি ও জিবিপিতে বিবেকানন্দ বিচার মঞ্চ আয়োজিত মেগা রক্তদান শিবির ও মতবিনিময় কর্মসূচিতে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। মুখ্যমন্ত্রী রক্তদান কর্মসূচি পরিদর্শন করেন এবং রক্তদাতাদের সঙ্গে কথা বলেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে বিবেকানন্দের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন মুখ্যমন্ত্রী সহ অন্যান্য অতিথিগণ। এদিনের অনুষ্ঠানে এজিএমসি’র বিভিন্ন বর্ষের ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন মুখ্যমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সত্যের পথে চলার একাগ্রতা ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার দৃঢ়তা সাফল্য অর্জনের পথকে মসৃণ করে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সময়ের সঙ্গে সাজুয্য রেখে আগামীর দিশা নির্বাচন করা প্রয়োজন। নির্ধারিত পঠন পাঠনের পাশাপাশি প্রবহমান বিভিন্ন ঘটনা এবং দেশ সর্বোপরি রাজ্য কোন পথে অগ্রসর হচ্ছে সেই সম্পর্কে ছাত্রছাত্রীদের ধারণা রাখা তাদের ভবিষ্যৎ জীবনের ক্ষেত্রে একান্ত প্রয়োজন।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সমৃদ্ধশালী রাজ্য বা দেশ নির্মাণের দায়িত্ব সঠিক ব্যক্তির হাতে রয়েছে কিনা তাও দেখতে হবে। এক্ষেত্রে যথোপযুক্ত ব্যক্তি চয়নে সবার সজাগ দৃষ্টি ও মতাধিকার প্রয়োজন। মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, মহিলা ক্ষমতায়ন ও স্বশক্তিকরণের লক্ষ্যে রাজ্যব্যাপী গুচ্ছ পরিকল্পনা রূপায়িত হচ্ছে। তাতে আরও গতি সঞ্চারিত করবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ঘোষিত চাকরিতে মহিলাদের নিয়োগের ক্ষেত্রে ৩৩ শতাংশ সংরক্ষণ।
প্রতিটি ক্ষেত্রে মহিলাদের অংশীদারিত্ব বৃদ্ধি এবং সমতা ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে এই সিদ্ধান্ত অগ্রণী ভূমিকা নেবে। স্বসহায়ক দল থেকে শুরু করে আত্মনির্ভরতার বিভিন্ন পথ রাজ্যের মহিলাদের স্বরোজগারী ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিচ্ছে। নারীদের আক্ষরিক ক্ষমতায়ন বর্তমান সরকারের সময়ে সফলভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে।
তিনি বলেন, নাগরিক পরিষেবা প্রদানে যারা যুক্ত তাদের উৎসাহিত করা গেলে একদিকে যেমন কাজে গতি আসে তেমনি অনিশ্চয়তাকে জয় করে নিশ্চিত সাফল্য পাওয়া যায়। যার অন্যতম নিদর্শন সম্প্রতি রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবায় একের পর এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
বর্তমানে প্রশাসনিক কাজে দায়িত্ব পালনে এড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতা হ্রাস পাওয়ায় নাগরিক পরিষেবা প্রদানে গতি ও স্বচ্ছতা এসেছে। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে স্বাস্থ্য দপ্তরের প্রধান সচিব জে কে সিনহা বলেন, সাফল্যের পেছনে না ছুটে নিজেকে যোগ্য হিসেবে মেলে ধরা প্রয়োজন। যথার্থ যোগ্যতা অর্জনই সাফল্য প্রাপ্তির পথকে মসৃণ করে।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিবেকানন্দ বিচার মঞ্চের সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্য বলেন, সমস্ত ধর্মীয় সংকীর্ণতার উর্ধ্বে উঠে মানবতার বার্তা দিয়েছিলেন স্বামী বিবেকানন্দ। রক্তের যেমন কোনও ধর্ম হয় না তেমনি স্বামী বিবেকানন্দের কাছেও বিষয়টি ছিলো একই রকম।
স্বামীজির আদর্শ পথেই চালিত হচ্ছে বিবেকানন্দ বিচার মঞ্চ। যার অন্যতম লক্ষ্য সমাজের ইতিবাচক পরিবর্তন। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য দপ্তরের অধিকর্তা শুভাশিস দেববর্মা, জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের মিশন অধিকর্তা ডা. সিদ্ধার্থ শিব জয়সওয়াল, মেডিক্যাল সুপার সঞ্জীব দেববর্মা, ডিরেক্টর মেডিক্যাল অ্যাডুকেশন চিন্ময় বিশ্বাস প্রমুখ।