অনলাইন ডেস্ক, ৫ মার্চ।। যে ইউক্রেনবাসীরা এখন থেকে মারা যাবেন তারা আপনাদের কারণেই মারা যাবেন। ইউক্রেনের আকাশে বিমান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা (নো-ফ্লাই জোন) জারি না করার ন্যাটোর সিদ্ধান্তকে এই ভাষাতেই সমালোচনা করলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি। রাশিয়ার বিমান যাতে আকাশপথে হামলা না চালাতে পারে তার জন্য ন্যাটোর কাছে ইউক্রেনের আকাশকে ‘নো-ফ্লাই জোন’ ঘোষণা করার আবেদন করেন জেলেনস্কি।
কিন্তু ন্যাটো যদি এমন নিষেধাজ্ঞা জারি করত এবং রাশিয়া এই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে হামলা চালাত, তা হলে তা হত আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করার শামিল। এবং ন্যাটোকে বাধ্য হয়েই রাশিয়ার বিমানে গুলি করতে হত। যার ফলে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ বেধে যাওয়ার আশঙ্কা ছিল। তাই জেলেনস্কির আশায় পানি ঢেলে এই অনুরোধ মেনে নিতে অস্বীকার করে ন্যাটো।
ইউক্রেনে বিমান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করলে ইউরোপে সরাসরি যুদ্ধ শুরু হতে পারে বলে জানান আমেরিকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। এই কারণেই ন্যাটো এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে তিনি জানান। শুক্রবার ফেসবুকে ন্যাটোর এই সিদ্ধান্তেরই প্রতিবাদ করেন জেলেনস্কি।
তিনি বলেন, ‘ন্যাটো দেশগুলো এমন ব্যাখ্যা দিচ্ছে যাতে মনে হয় ইউক্রেনের আকাশপথে বিমান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করে দিলে তা ন্যাটোর বিরুদ্ধে রাশিয়ার আগ্রাসনকে সরাসরি উস্কে দেবে। এর মাধ্যেমে তারা নিজেদের দুর্বল এবং নিরাপত্তাহীন বলেই প্রমাণিত করছে। যদিও তাদের কাছে আমাদের চেয়ে অনেক গুণ শক্তিশালী অস্ত্র রয়েছে’।
ন্যাটো নেতৃত্বকে উদ্দেশ করে তিনি আরও বলেন, ‘ইউক্রেনের আকাশে বিমান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি না করে আপনারা এই দেশের শহর ও গ্রামে আরও বোমা হামলা চালানোয় সবুজ সঙ্কেত দিয়েছেন। আপনারা চাইলে বিমান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারতেন। কিন্তু আপনারা তা করলেন না’।
শুক্রবার ন্যাটোর শীর্ষ অধিবেশনে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই অধিবেশনকেও ‘দুর্বল এবং বিভ্রান্তিকর’ অধিবেশন বলে উল্লেখ করেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। জেলেনস্কি অবশ্য ন্যাটোতে থেকেও ইউক্রেনকে বিভিন্ন ভাবে সাহায্য করা দেশগুলোর প্রতি কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করেন এই দিন।
শনিবার ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার আগ্রাসন দশম দিনে পড়ল। ইতিমধ্যেই রুশ হামলার মুখে পড়ে ইউক্রেন বিপর্যস্ত। রুশ ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে কয়েক হাজার মানুষ মারা যাওয়ার পাশাপাশি বেশ কয়েকটি শহরও ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। তবে এখনও ইউক্রেনের জয় নিয়ে তিনি নিশ্চিত বলেই জানিয়েছেন জেলেনস্কি।