অনলাইন ডেস্ক, ৪ মার্চ।। ইউক্রেনের জাপোরিঝিয়া পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র দখল করে নিয়েছে রাশিয়া। ইউক্রেন সেনাদের সঙ্গে তীব্র লড়াইয়ের পর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি দখলে নেয় রুশ সেনারা। ইউক্রেনের এই পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি পুরো ইউরোপের মধ্যে সবচেয়ে বড়।
স্থানীয় কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে শুক্রবার (৪ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। এর আগে পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের একটি ভবনে রাশিয়ার বোমা হামলায় সেখানে আগুন ধরে যায়।
বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, রাশিয়ার দখলে যাওয়ার পর কর্মীরা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। তারা আরও জানিয়েছে, পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কর্মীরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন এবং বিদ্যুৎ ইউনিটগুলোর অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছেন।
এর আগে পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের একটি ভবনে রাশিয়ার বোমা হামলায় সেখানে আগুন ধরে যায় বলে জানিয়েছিল ইউক্রেনের কর্মকর্তারা। সেসময় এই পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের আশপাশে রাশিয়া এবং ইউক্রেনের সৈন্যদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের খবরও সামনে আসে।
আগুন লাগার পর আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ) জানিয়েছিল, তারা ইউক্রেনের কর্মকর্তাদের সাথে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন এবং জানতে পেরেছেন যে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির অপরিহার্য অংশগুলো এখনও চলমান আছে, কিছু নষ্ট হয়নি।
এদিকে বিদ্যুৎকেন্দ্রে আগুন লাগার খবরে যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানিমন্ত্রী জেনিফার গ্রানহোম টুইটারে লেখেন, ইউক্রেনের জেপোরোজিয়া পারমাণবিক কেন্দ্রে অগ্নিকাণ্ডের বিষয়ে তিনি ইউক্রেনের জ্বালানিমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন। জেনিফার বলেন, তিনি মার্কিন নিউক্লিয়ার ইনসিডেন্ট রেসপন্স টিমকে সক্রিয় করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
গ্রানহোম বলেন, পারমাণবিক কেন্দ্রের কাছে রাশিয়ার সামরিক অভিযান অত্যন্ত বেপরোয়া পদক্ষেপ এবং এটি শেষ হওয়া উচিত। তিনি আরও বলেন, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, মার্কিন পারমাণবিক নিয়ন্ত্রণ কমিশন এবং হোয়াইট হাউসের সঙ্গে পুরো বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
অবশ্য আগুনের ঘটনায় ওই পারমাণবিক কেন্দ্রে বিকিরণের মাত্রা বাড়েনি বলেও জানান তিনি।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি রাশিয়ার বিরুদ্ধে ‘পারমাণবিক সন্ত্রাস’ অবলম্বন করার এবং রাশিয়া ইউক্রেনে চেরনোবিল বিপর্যয়ের ‘পুনরাবৃত্তি’ করতে চায় বলে অভিযোগ করেছেন।
এক ভিডিও বার্তায় জেলেনস্কি বলেন, ‘রাশিয়া ছাড়া অন্য কোনো দেশ পারমাণবিক শক্তি ইউনিটগুলোতে গুলি বা বোমা হামলা চালায়নি। আমাদের ইতিহাসে এই প্রথম। মানবজাতির ইতিহাসেও এমন হামলার ঘটনা এটাই প্রথম। সন্ত্রাসী রাষ্ট্র এখন পারমাণবিক সন্ত্রাসের আশ্রয় নিয়েছে’।